শেখ হাসিনা সরকার দেশ ছেড়ে পালালেও জুলাই-আগস্টজুড়ে নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারানোর পাশাপাশি আহত হয়েছে অসংখ্য ছাত্র-জনতা।
আহতদের কেউ কেউ এখনও জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাদের একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজল মিয়া। ৫ আগস্ট মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গত তিন মাস ধরে ভর্তি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের এইচডিইউতে। শুরু হয় তাকে বিদেশে নেয়ার প্রক্রিয়াও। তবে এর মধ্যে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয় তার। বাম হাত ও পা পুরোপুরি অচল হয়ে যায়।
কাজল মিয়া বড় বোন বলেন, ' ৫ তারিখের বিজয় মিছিলের সময় তার মাথায় গুলি লাগে। এবং বেশ ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল, এখনও আছে।'
এমন অবস্থায় রোবটিক ফিজিওথেরাপি দেয়ার উদ্দেশ্যে তাকে বিদেশে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক রুহুল মুক্তাদির বলেন, 'যখন সে ভর্তি হয় তখন তার জ্ঞানের মাত্রা ছিল তিন। মানে একেবারেই ছিল না, নেই বললেই চলে। সে মেশিনের ভেন্টিলেটরে ছিল। কিন্তু আমাদের সার্জন যারা ছিল, তাদের চিকিৎসার ফলে কাজল তার ভালোর দিকে যায়।'
রোববার (১৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেয়া হয় থাইল্যান্ডের বেজথানি হাসপাতালে। এ নিয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহত পাঁচ জনকে পাঠানো হয়েছে দেশের বাইরে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে তুরস্ক, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, 'পাইপলাইনে আরও ২০ থেকে ২৫ জনের মতো আছে যাদের বিদেশ পাঠাতে হবে। সাতজনকে আমরা তুরস্কে পাঠানোর জন্য ঠিক করেছি, তাদের চিকিৎসার জন্য। এর মধ্যে তিনজন আছে চোখের বাকি চারজন হলো অর্থপেডিকের। তাদের (তুরস্ক) সাথে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তারা জানিয়েছে, তারা চিকিৎসার খরচ বহন করবে। তাকা খাওয়া আমাদের দিতে হবে।'
তিনি বলেন, '৬৪ লাখ টাকা শুধু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দিতে হচ্ছে। আমাদের প্রথম একটা ইনিশিয়াল ডিপোজিট ১০ লাখ টাকার দিয়েছি। এরপর ক্রমান্বয়ে যখন যা বলবে আমরা সেটা দিব। আমরা যখন বাইরে থেকে নিয়ে আসলাম, আমাদের ডাক্তারদেরও কিন্তু একটা লার্নিং প্রসেস হয়ে গেলো। আমাদের যদি কোনো জায়গায় ঘাটতি থাকে সেটা আমাদেরও শিখার একটা জায়গা বলে আমি মনে করি।'
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও জানান, আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের।