চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে দ্রুত নির্বাচনের প্রসঙ্গে বিএনপির অনড় অবস্থা দেখা গেলেও কোনো কোনো দলের অবস্থা কিছুটা ভিন্ন।
নির্বাচন কেন্দ্রিক বহুমুখী আলোচনার মাঝে বিএনপি অভিযোগ করে আসছিল, তাদের জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সক্রিয় আছে বিভিন্ন মহল। শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত সফল হবে না বলে মন্তব্য করেন দলটির চেয়ারপারসন উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান আর বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল ওয়ান-ইলেভেন সরকার। কাদের মাধ্যমে আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না, ইশারায় বুঝে নিবেন। সেই প্রকল্প ইনশাআল্লাহ কৃতকার্য হতে পারেনি। আবার আরেকটা পরিকল্পনায় যাবেন। আবার বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার একটা প্রজেক্টে যাবেন। বাংলার মাটিতে এটা আর হবে না।’
এদিকে আরেকটি অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতারা জানান, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই সিদ্ধান্ত নিবে কারা ক্ষমতায় আসবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে না দেয়াকে নতুন ফ্যাসিবাদ আখ্যা দেন তারা। জানান, দেশে কোনো অরাজকতা চায় না বলেই নির্বাচন চায় বিএনপি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আমি বুঝতে পারি না যে তারা কীভাবে বলেন, হাসিনাও বলতেন যে নির্বাচন কেন দিবো? ওই তারেক জিয়া এসে দেশ চালাবে সেজন্য। এখনও এই সরকার বা সরকারকে যারা নির্বাচন পেছাতে বলে তারা বলে যে, নির্বাচন দিলেই তো বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে। এই জন্য দ্রুত নির্বাচন দেয়া যাবে না। আসলে জনগণের উপরে তাদের কোনো আস্থা নেই।’
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব, ঐক্য ও প্রবৃদ্ধি'র পথে কূটনীতি-শাসনব্যবস্থার রূপান্তরমূলক আলোচনায় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, অভ্যুত্থানের পরও, গণতন্ত্র নিয়ে হতাশা কাটেনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। এবং গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেয়া যায় না। আপনি আমার উপর চাপিয়ে দিলেন তাহলে হবে না। এটি চর্চা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল এসময় আরও জানান, আমেরিকা, ভারত কিংবা চীন কেউই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এত যে রক্তপাত হলো, রক্ত ঝরলো, এত যে মায়ের বুক খালি হলো তার পরিণতি কী হবে শেষ পর্যন্ত। আমি বিশ্বাস করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভালো হবে এবং খুব ভালো হবে। দেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎ আমাদের নির্মাণ করতে হবে। ওই আমেরিকা থেকে এসে ট্রাম্পও তৈরি করে দিবে না বা চীন থেকে শি এসেও তৈরি করে দিবে না। অথবা ভারত থেকে মোদিও আমাদের ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবে না।’
দেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান বিএনপি নেতারা।