আজ (শনিবার, ১৯ এপ্রিল) দুপুরে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী শহীদদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে অন্য কোনো দল কিংবা রাষ্ট্র সেইভাবে দাঁড়ায়নি, দাঁড়াতে পারেনি।
বুলবুল বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ছিল এবং আছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যে কোনো সহযোগিতা জামায়াতে ইসলামী করবে।’
শহীদের নিজ দলের কর্মী দাবি করা দল কতজন শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশ্ন রেখে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শহীদ এবং আহতদের দলীয় সম্পদে রূপ দেয়নি, দিবে না। জামায়াতে ইসলামীর স্পষ্ট ঘোষণা প্রত্যেক শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীরা আমাদের জাতীয় বীর, জাতীয় সম্পদ। সেজন্য জামায়াতে ইসলামী শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা এবং আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দলমত নির্বিশেষে চালিয়ে আসছে। আগামীতেও সেই ধারা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যত নিপীড়ন চালিয়েছে জনগণ ততই প্রতিবাদী আর বিক্ষুব্ধ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করে জনগণের উপর গণহত্যা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ।’
জুলাই আন্দোলনে জামায়াতের আমীর বিদেশ থেকে দেশে ছুটে এসেছেন আর আওয়ামী লীগ দেশ থেকে পালিয়ে গেছে উল্লেখ করে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন জামায়াতে ইসলামীর আমীর বিদেশে ব্যক্তিগত কাজে অবস্থান করায় দিনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন ও সহযোগিতা দিতে দেশে ছুটে আসেন। আমীরে জামায়াত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্দেশনার আলোকে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় কাজ করে। ঢাকা মহানগরীতে বিনামূল্যে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। খুনি হাসিনা ঐ আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার কথা স্বীকার করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। জামায়াতে ইসলামী দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দুর্বার গতিতে রূপ দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়েছে। দলকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আলাদা কোন কর্মসূচি সেই সময় দেওয়া হলে, আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে গণহত্যা আরো জোরালো করার সুযোগ পেতো। কিন্তু আওয়ামী লীগকে সেই সুযোগ দেয়নি জামায়াতে ইসলামী।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, মহানগরীর কর্মপরিষদের সদস্য যথাক্রমে মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, আবদুস সালাম, কামরুল আহসান হাসান, শাহীন আহমেদ খান, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সহকারী সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন সহ মহানগরীর নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে ২১টি শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১৫টি পরিবারকে দ্বিতীয় কিস্তির ১ লাখ টাকা করে এবং নতুন ৬টি শহিদ পরিবারকে নগদ ২ লাখ টাকা করে অনুদান তুলে দেওয়া হয়।