দেশে এখন
0

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই জুলাই গণহত্যার তদন্তকাজ শেষ করবে জাতিসংঘ

ড. ইউনূসের সঙ্গে ভলকার তুর্কের বৈঠক

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই জাতিসংঘ জুলাই গণহত্যার তদন্তকাজ শেষ করবে বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। আজ (বুধবার, ৩০ অক্টোবর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।

বৈঠকে ভলকার তুর্ক জানান, গত জুলাই-আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কাজ চলমান আছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, যা বিপ্লবের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করছে, তার কাজ নিয়েও আলোচনা করেন। এর পাশাপাশি তিনি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত সংস্কার কমিশন নিয়েও আলোচনা করেন ।

স্বৈরচারী সরকারের সময় ঘটে যাওয়া বহু গুমের ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান ভলকার তুর্ক।

তিনি বলেন, 'এমন অনেককিছু আছে যা ঠিক করা দরকার। গুমের ঘটনা তদন্তে অফিস তদন্ত কমিশনকে সহায়তা করছে।'

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে 'স্বাধীন' এবং 'সম্পূর্ণ কার্যকরী' করে আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ভলকার তুর্ক জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর ঢাকায় তাদের উপস্থিতি জোরদার করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারকে বাংলাদেশ সফর করার জন্য এবং বিপ্লবের সময় তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষ আপনার সফরে খুশি। তারা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।'

সরকার প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উন্নয়ন ও মানবাধিকার যেন একসঙ্গে চলতে পারে তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান ড. ইউনূস।

এই সরকার আগের সরকারের ভুল ও অপরাধের 'পুনরাবৃত্তি' করবে না বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার এবং প্রধান উপদেষ্টা এ সময় রোহিঙ্গা সংকট, বিশেষ করে মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া কয়েক হাজার নতুন রোহিঙ্গার আগমন নিয়েও আলোচনা করেছেন।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সংকট সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক। প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরি করতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন যাতে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষেরা তাদের নিজ অঞ্চলের কাছাকাছি থাকতে পারে।

তারা দু'জনই এই আঞ্চলিক সমস্যাটির দ্রুততম টেকসই সমাধানের জন্য 'কিছু গতিশীল উদ্যোগ' নেয়ার প্রচেষ্টার কথা জানান এবং এ ক্ষেত্রে আসিয়ানের জোরালো ভূমিকার আহ্বান করেন।

এএম

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর