ভ্রমণ
দেশে এখন
0

এখনো পানির নিচে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, এক মাসে ক্ষতি ২৫ লাখ টাকা

কাপ্তাই হ্রদের এক ফুট পানির নিচে এখনও তলিয়ে আছে রাঙামাটির পর্যটন ঝুলন্ত সেতু। গত ২৩ আগস্ট থেকে বাণিজ্যিক টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। সেতু ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেতু ডুবে থাকায় হতাশা জানিয়েছেন ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছেন, আয় বন্ধ থাকায় দৈনিক গড়ে ৭০ হাজার টাকা হিসেবে গেল একমাসে ক্ষতি হয়েছে ২৫ লাখ টাকার বেশি।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের পর ১৯৮৫ সালে দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি করা হয় আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি। তাই পর্যটকরা প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক সেতুটি দেখতে আসেন। এতে জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ ফি, গাড়ি পার্কিং ও ট্যুরিস্ট বোট ইজারা থেকে বছরে আয় আসে অন্তত আড়াই কোটি টাকা।

সেতু ডুবে থাকায় হতাশা জানিয়েছেন ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। ছয় জনের দল নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা মনির হোসেন বলেন, 'সেতু ডুবে আছে আগে জানতে পারলে এখন আসতাম না। স্মৃতি হিসেবে কিছু ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, তাও হলো না। সুতুতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।'

চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে এসে মন খারাপ হওয়ার কথা জানালেন শিল্পী দাশ। তিনি বলেন, 'এখানে এসে শুনলাম প্রতিবছরই পানিতে ডুবে যায় সেতুটি। এর স্থায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন সরকার? এতদূর থেকে এসে সেতুতে ঘুরতে পারলাম না। সবারই তো মন খারাপ হয়ে গেছে।'

সেতুর টিকিট বিক্রয় কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সোহেল খান বলেন, '২৩ আগস্ট থেকে বাণিজ্যিক টিকিট বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ছুটির দিনগুলোতে পাঁচ হাজার থেকে ১০ বা ১২ হাজার পর্যন্ত পর্যটক সেতুটি ভ্রমণ করে থাকেন। এখন সব বন্ধ হয়ে আছে। পানি নেমে গেলে সেতু খুলে দেয়া হবে।'

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানিয়েছেন, আয় বন্ধ থাকায় এখন দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে গড়ে ৭০ হাজার টাকার বেশি।

হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মিনস সি লেভেল। কিন্তু বৃষ্টি হলেই পর্যটন সেতুসহ শহর এলাকায় হ্রদ তীরবর্তী বসতঘর ডুবে যায়। মূলত হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। তবে পানির স্তর বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছলে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট কয়েক দফা খুলে দিয়ে পানি বের করে দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এরপরও উজান থেকে পানি নামতে থাকায় হ্রদের পানির উচ্চতা কমছে ধীর গতিতে।

এসএস