আশুলিয়া কান্দাইল এলাকার বাসিন্দারা মোমিন, নিজে ডেঙ্গু জ্বর সেরে উঠতেই গ্রাম থেকে বেড়াতে আসা মা আমেনা বেগমও জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন মহাখালী ডেডিকেটেড হাসপাতালে। অল্পসময়ে ছয় সদস্যদের পরিবারের তিন জনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
মোমিন বলেন, 'আমার জানামতো অনেক রোগী এখন এদিকে আছে। আমি কয়দিন আগে অসুস্থ ছিলাম, এখন আমার মা অসুস্থ হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।'
হাসপাতালটিতে সবমিলিয়ে ১০০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যাদের একটি বড় অংশ ডেঙ্গু আক্রান্ত। দেশের বিভিন্ন জেলাসহ ঢাকার বাড্ডা, রামপুরা থেকে এসেছেন।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে আসা এসব রোগীদের অভিযোগ এলাকায় কমেছে ফগিংসহ কীটনাশক প্রয়োগ। যে কারণে বেড়েছে মশার প্রাদুর্ভাব।
হাসপাতালে আসা একজন বলেন, 'সিটি করপোরেশনের কেউ যায় না এখন আমাদের ওখানে। অনেক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেছে।'
অন্যদিকে আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশ উপসর্গ একই। অতিরিক্ত জ্বর, মাথাব্যথা, বমি নিয়ে ভর্তি হয়েছেন কেউ কেউ। হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সেবা পেয়ে জানিয়েছেন সন্তুষ্টির কথা।
একজন রোগী বলেন, 'ডাক্তার আর নার্সরা আমাদের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করছে। আমাদের ভালো করেই সেবা দিচ্ছে তারা।'
দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। মৃত্যুও বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। অন্যদিকে এবার মৃত্যুহার এখন পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে বেশ খানিকটা বেশি।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. হুমায়রা জেসমিন তৃষা বলেন, 'গতবছরের তুলনায় মৃত্যুহার অবশ্যই কম। জুন-জুলাইয়ে আমরা যে পরিমাণ ডেঙ্গু রোগী আশা করেছিলাম, সে তুলনায় এখন একটু বেশি।'
লক্ষ্মণ দেখামাত্রই পরীক্ষার আওতায় আসার পরামর্শ এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের।
ডা. হুমায়রা জেসমিন তৃষা বলেন, 'শুধু প্যারাসিটামল, যেটাকে আমরা ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ বলি সেটা খেতে হবে। এটা জ্বর কমাবে কিন্তু রোগ নিরাময় করবে না। রোগ কী? তা জেনে নিতে হবে। জেনে নিয়ে বুঝে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ থেকে হবে।'
বাংলাদেশে অন্তত ২০২২ সালের অভিজ্ঞতা হলো, ওই বছর সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল অক্টোবর মাসে। এবার এখন পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যু কম হলেও আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি, বিশেষ করে বর্ষা পরবর্তী প্রবল বৃষ্টি ডেঙ্গুর অশনিসংকেত দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।