টিপস
জীবনযাপন
0

পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানাবেন কিভাবে?

শীত গেল, চলছে বসন্ত, এরপরই প্রচণ্ড গরম। দিনের বেলা গরম আর রাতে শীতল হাওয়া। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের খেলায় নানা শারীরিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রোগব্যাধি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমাদের সবাইকে হতে হবে সচেতন। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সঙ্গে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা মানিয়ে নিতে হবে।

ঋতুভেদে অসুখের বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত। সাময়িক সময়ের জন্য হলেও অসুখ তো অস্বস্তিকরই। তবে একটু সতর্ক হলেই এগুলো প্রতিরোধ করা যায়। তাই সহজে নিরাময়যোগ্য এসব রোগব্যাধি নিয়ে উদ্বেগ নয়।

ঋতু পরিবর্তনের সময় সবচেয়ে সাধারণ রোগ হলো সর্দি-কাশি। শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে, শীতের শেষে আর গরমের শুরুতে তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময়টাতে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। এসময় ধুলোবালির কারণে প্রায়ই হাঁচি-কাশি, দুই-তিনদিন নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি পড়ে। গলাব্যথা, শুকনা কাশি আর জ্বরও থাকতে পারে। এগুলো বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত, কিছু কিছু রোগ চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়।

তবে শুকনা কাশিটা কয়েক সপ্তাহ ভোগাতে পারে। শুকনো কাশির কারণে হতে পারে গলা ব্যথা। গলাব্যথার জন্য গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। গরম গরম চা বা গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসি পাতার রস দিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

 

অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসের পরপরই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। কাশির সঙ্গে হলুদ বা সবুজ রঙের কফ বের হলে সঙ্গে জ্বর থাকলে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন চিকিৎসকের পরামর্শ।

এই সময়টাতে অন্যান্য ভাইরাস রোগের প্রাদুর্ভাবও হতে পারে। যেমন- ইনফ্লুয়েঞ্জা, এলার্জি, জলবসন্ত, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস বা শ্বাসজনিত অন্যান্য রোগ, সাইনোসাইটিস এবং টনসিলাইটিস জাতীয় রোগ। যাই হোক না কেন, কালক্ষেপণ না করে যতো দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। যারা হাঁপানিসহ অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের রোগে ভোগেন, তারা বাইরে বেরোলে ধুলোবালি পরিহার করুন।

পুরো মৌসুমজুড়ে দেখা দেয়া এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পরিবর্তন আনুন খাদ্যতালিকায়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার যোগ করুন যাতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এসময় নিয়মিত খেতে পারেন ভিটামিন সি জাতীয় সবজি ও ফলমূল। রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখুন কমলা ও লেবুর মতো উপাদান। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে, সর্দি-কাশির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে ভিটামিন সি।

 

খেতে পারেন ব্রকোলি। এটি ভিটামিন এ, সি ও ই-তে পূর্ণ। এই সবজিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইবার শারীরিক জটিলতা থেকে মুক্তি দেয়।

 

এসময় ব্ল্যাক টি খেলে মিলবে উপকার। রোজ ব্ল্যাক টি খাওয়ার অভ্যাস করুন। অ্যান্টি অক্সিডেন্টপূর্ণ ব্ল্যাক টি শারীরিক জটিলতা কমায়।  

 

ঋতু পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকতে বাদাম খান। সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বাদাম অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে, যা শরীর সুস্থ রাখে।

এসময় স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হোন। বাড়িঘরের আনাচে-কানাচেসহ, আসবাবপত্র পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাইরে গেলে মাস্ক পরুন। শহরের দূষিত বাতাস থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করতে মাস্ক পরার বিকল্প নেই। এছাড়া বাইরে থেকে আসার পর হাত-পা, মুখ ভালোমতো পরিষ্কার করে অন্যকিছু স্পর্শ করুন।