যুদ্ধ , উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে আশাবাদী ইসরাইলি-ফিলিস্তিনিরা দু’পক্ষই

ট্রাম্পের কাছেই সমাধান চাইছেন ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিরা। জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে দুই পক্ষই আশাবাদী। এদিকে যুদ্ধবিপর্যস্ত মানুষের সহায়তায় ২০২৫ সালে জাতিসংঘের রেকর্ড চার হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের বাজেট প্রয়োজন। ট্রাম্পের অধীনে এই অর্থ সংস্থান নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ট্রাম্পের কড়া অভিবাসন নীতি নিয়েও ভয়ে আছেন বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা। এছড়া ট্রাম্পের অভিযোগ, ছেলেকে ক্ষমা করে মার্কিন বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন বাইডেন।

অবরুদ্ধ গাজায় হামাস-ইসরাইল সংঘাতের এক বছরেরও বেশি সময় পরও পার হলেও, এখনও কোনো সমাধান আসেনি। বরং সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ ছড়িয়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। বাইডেনের শাসনামলে ব্যর্থ হয়েছে যুদ্ধবন্ধের সব প্রায় প্রচেষ্টা। যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি রয়ে গেছে কেবল কাগজে কলমেই। গাজায় একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি ইসরাইলি বাহিনীর হামলা।

এমন অবস্থায় নতুন করে আশা জাগিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতা গ্রহণের আগেই গাজা সমস্যার সমাধান চেয়েছেন তিনি। জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ও যুদ্ধ বন্ধ না করলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি জানিয়েছেন ট্রাম্প। এ অবস্থায় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের জনগণ তাকিয়ে আছে ট্রাম্পের পদক্ষেপের দিকে।

ফিলিস্তিনিরা বলছেন গাজা উপত্যকাকে এরইমধ্যে নরকে পরিণত করেছে ইসরাইল। ট্রাম্পের কাছে তাদের চাওয়া ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর আগ্রাসন থামানো। ফিলিস্তিনিরা জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন ট্রাম্পের কাছে।

গাজার স্থানীয় একজন বলেন, 'আমরা ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের অপেক্ষা আছি। গাজায় গণহত্যা বন্ধে বাইডেন প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন আমরা ট্রাম্পের কাছে সমাধান আশা করছি।'

স্থানীয় অন্য একজন বলেন, 'যেকোনো শর্তে আমরা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাই। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা প্রয়োজন। আমরা তাঁবুতে থাকলেও নিরাপদে থাকতে চাই।'

গাজা সংকট নিয়ে এমন কঠোর হুঁশিয়ারির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিইয়ামিন নেতানিয়াহু। তার মতে, ট্রাম্পের উদ্যোগে এবার জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব হবে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, 'জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের দায় ও তাদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রচেষ্টায় নতুন করে শক্তি যোগাবে।'

জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স বলছে, বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধে ২০২৫ সালে ৩২টি দেশের প্রায় ১৯ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে এবং খাদ্য সংকটে ভুগবে। তাদের সাহায্যে প্রয়োজন হবে চার হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের। তবে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের আমলে শীর্ষ দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কারণ আগের মেয়াদে জাতিসংঘের বাজেটে কাটঁছাট করেছিলেন ট্রাম্প।

জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল টম ফ্লেচার বলেন, 'কঠিন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্যান্য দাতা দেশগুলোও জাতিসংঘের মানবিক প্রচেষ্টার কার্যক্রমকে আদর্শগতভাবে কম সমর্থন দেবে। আমার বিশ্বাস তাদের কাছে আসল চিত্র তুলে ধরলে সংকট কেটে যাবে।'

এদিকে ট্রাম্পের কড়া অভিবাসন নীতির ঘোষণায় মাঝপথ থেকে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন বহু অভিবাসী। অনেকে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের চেষ্টা করছেন। আশেপাশে প্রায় সব দেশই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ব্যবহার করছে মেক্সিকো সীমান্ত। এতে চাপে পড়েছে মেক্সিকো সরকারও।

একজন অভিবাসী প্রত্যাশী বলেন, 'আমরা আশাবাদী। ট্রাম্প সীমান্ত বন্ধ করে দিতে পারেন। তবে সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।'

অভিবাসী প্রত্যাশী অন্য একজন বলেন, 'আসলে ট্রাম্প কী করবেন তা আমরা এখনও নিশ্চিত না। আমার বিশ্বাস তিনি আমাদের ফেরত পাঠাবেন না।'

এদিকে ট্রাম্পের অভিযোগ ছেলে হান্টার বাইডেনকে ক্ষমা করে মার্কিন বিচার বিভাগকে কলঙ্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বন্দুক আইন ও কর ফাঁকির মামলায় দোষী সাবস্ত হয়েছিলেন হান্টার বাইডেন। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাইডেন তাকে মুক্তি দিয়েছে।

এসএস