উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে মরিয়া ইসরাইল

ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইসরাইল। যদিও এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর দীর্ঘ ৩০ মিনিটের ফলপ্রসূ ফোনালাপ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাত বন্ধের আপ্রাণ চেষ্টা করার দাবি করলেও তেহরানের বিরুদ্ধে হুমকি ধামকির মাত্রা উল্টো বাড়িয়েছে তেল আবিব। মারাত্মকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অন্যদিকে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো যদি তেহরানের বিরুদ্ধে তেল আবিবকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দেয়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতির জন্য সতর্ক করেছে ইরান।

সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনীকে পিছু হটানোর দাবি করছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ঠিক এমন সময় রীতিমতো মাথা নষ্ট ইসরাইলের। তাই হিজবুল্লাহকে শক্তি জোগানো তেহরানকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তেল আবিব।

নয়দিন আগে ইরানের ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় সম্ভাব্য ইসরাইলি হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। বিষয়টি নিশ্চিত করে হোয়াইট হাউস বলেছে, দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘ ৩০ মিনিটের ফোনালাপ ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা কমাতে নেতানিয়াহুকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা দেয়নি ওয়াশিংটন। কিংবা ইরানে ইসরাইলের সম্ভাব্য হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কি ভূমিকা থাকবে তারও কোনো ধারণা মেলেনি। যদিও ইরান-ইসরাইল সংঘাতের পুরোপুরি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারিন জিন পিয়েরে বলেন, ‘আমি বলতে পারি যে তারা ইরান ইস্যুতে আলোচনা করেছে। স্পষ্টতই দুই নেতা সরাসরি ফোনে কথা বলেছেন। তাই আমি বলতে চাই, এই আলোচনা ফলপ্রসূ ছিল। ফোনালাপ প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী ছিল। যা গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনেকবার ফোনালাপের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

দুই নেতার মধ্যে ইতিবাচক ফোনালাপ হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূতও। উল্টোদিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ইরানে এমনভাবে হামলা চালানো হবে, যা দেশটির শাসকগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক হবে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, ইসরাইল হামলার প্রতিশোধ নেবে। আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই, এটা ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হামলা। যা গত সপ্তাহে ইরান থেকে করা হয়েছিলো। আমরা অবস্থান নিচ্ছি। প্রতিক্রিয়া ইরানের শাসকগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক হবে।’

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ খুব মারাত্মকভাবে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এমন জায়গায় হামলা চালানো হবে, যা কখনো ধারণাই করতে পারবে না তেহরান।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেন, ‘ইরানিরা আমাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছিল। তবে হামলাগুলো আক্রমণাত্মক হলেও তারা ব্যর্থ হয়েছিল। তবুও আমরা তাদের ছাড় দেবো না। যারাই আমাদের আক্রমণ করবে, তার জন্য তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। আমাদের পালটা আক্রমণ এতোটা মারাত্মক হবে যে, যা কখনও কল্পনাও করতে পারবে না শত্রুপক্ষ। তারা বুঝতেই পারবে না, কী ঘটেছে এবং কীভাবে হলো। শুধু ফল দেখতে পাবে।’

ইরান-ইসরাইলের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছানোয় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়ছে। এ অবস্থায় উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোকে ইরানের বিরুদ্ধে আকাশসীমা ব্যবহারে ইসরাইলকে অনুমতি দেয়া ঠিক হবে না, বলে মত বিশ্লেষকদের। এমনকি ইরানও সতর্ক করেছে যে, উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো তাদের বিরুদ্ধে ইসরাইলকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিলে তারও প্রতিক্রিয়া জানাবে তেহরান।

ঠিক এমন উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে সৌদি আরব সফরে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আঞ্চলিক উত্তেজনা নিয়ে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ইরানে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে তেহরান।

এফএস