গাজা ও লেবাননে প্রতিদিনই ছাড়াচ্ছে ইসরাইলি আগ্রাসনের মাত্রা। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) একদিনেই দখলদার বাহিনীর হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ১০০ জনের। এর মধ্যে কেবল উপত্যকাটিকেই প্রাণহানির সংখ্যা অর্ধশতাধিক।
দিন দিন তীব্র হচ্ছে গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি। আগ্রাসনের মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয় আর খাদ্যের সন্ধানে ছোটাছুটি করছেন ফিলিস্তিনিরা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়, ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় সহায়তা পৌঁছাতে দিচ্ছে না ইসরাইল।
জাতিসংঘের অ্যাসিস্ট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জয়েস মোসুয়া বলেন, 'নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সেবা বন্ধ হয়েছে গেছে। এমনকি বিদ্যুৎও নেই। এতে ক্ষুধা বাড়ছে। এমনকি দুর্ভিক্ষের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এমন ঘটনা গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।'
গেল মাসে গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ৩০ দিনের সময় বেধে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দাবি, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও পর্যাপ্ত সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি উপত্যকায়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এখনও বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়নি। এমনকি তেল আবিবের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, 'ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের আইন ভঙ্গ করছে কী না, সে বিষয়ে এখনও পর্যালোচনা করা হয়নি। তবে আমরা দেখতে চাই তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে এবং কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।'
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ। এসময় বছরব্যাপী যুদ্ধে সর্বাত্মক সহায়তা দেয়ায় বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনকে ধন্যবাদ দেয়া হয় তেল আবিবের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয় নতুন প্রশাসনকে। অন্যদিকে এক ভিডিওবার্তায় খামেনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে ইরানি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, 'খামেনি প্রশাসন ইসরাইলের চেয়েও বেশি ভয় পায় আপনাদের, ইরানি জনগণকে। আপনাদের স্বপ্ন ধ্বংসের জন্য তারা অর্থ ও সময় ব্যয় করছে। আপনাদের স্বপ্নকে ধ্বংস হতে দিবেন না। আমি আপনাদের গুঞ্জন শুনছি। ইসরাইল ও পুরো বিশ্ব আপনাদের সঙ্গে আছে।'
ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ বলেন, 'সব খারাপের সূত্রপাত ইরানকে ঘিরে। ইসরাইলের শান্তি বিনষ্টের জন্য প্রক্সিদের মাধ্যমে তারা সর্বাত্মক প্রয়াস চালাচ্ছে। মিস্টার প্রেসিডেন্ট, ইরান যেনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করতে পারে, আপনার প্রশাসনের মতো পরবর্তী প্রশাসনের প্রতি এই আহ্বান রইলো।'
এদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় লণ্ডভণ্ড ইসরাইলের উত্তরাঞ্চল। নাহারিয়ায় রকেট হামলায় নিহত বেশ কয়েকজন। মঙ্গলবার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০টি রকেট ছোড়ার কথা জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।