গাজা ও লেবাননে আগ্রাসনের জেরে ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। সেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন, অঞ্চলটিতে কবে থামবে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। এই প্রসঙ্গে অঞ্চলটির অশান্তির জন্য ইরানই একমাত্র হুমকি বলে অভিযোগ করে আসছে ইসরাইল ও তাদের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ইরানে হামলা চালানোর পরও সুর পাল্টায়নি তারা। সংঘাত আর দীর্ঘ না করে তেহরানকে এখানেই থেমে যাওয়ার জন্য হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনার জন্য ইরানকে দুষলেও, ইসরাইলের দখলদারিত্বের ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। যা মনে করার জন্য খুব বেশি আগের কথা ভাবার দরকার নেই। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণের সময় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর হাতে থাকা গ্রেটার ইসরাইলের ম্যাপই বলে দেয়, কোন পথে হাঁটছে তেল আবিব। কারণ গ্রেটার ইসরাইলের ম্যাপে ফিলিস্তিন, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, মিশর এবং সৌদি আরবের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখান থেকেই স্পষ্ট হয় গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পথে এগুচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। আর এর জন্যই গাজা, পশ্চিমতীর ও লেবাননে বাড়ানো হচ্ছে আগ্রাসন। বোমার আঘাতে বড় বড় আবাসিক ভবনগুলোকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সীমানা বাড়ানো হচ্ছে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। গাজায় স্থল অভিযানে থাকা সেনাদের ইউনিফর্মেও গ্রেটার ইসরাইলের মানচিত্রযুক্ত ব্যাজ দেখা গেছে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল। এমনকি ইসরাইলে থাকা ইহুদিদের উপাসনালয়ের সাইনবোর্ডেও রয়েছে গ্রেটার বা বৃহত্তর ইসরাইলের কথা।
রেডিও তেহরানের এডিটর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ অবস্থায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইসরাইলি তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ গত কয়েক মাস ধরে ইরান, সিরিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে তারা। গাজার পর লেবাননেও খুলেছে যুদ্ধের নতুন ফ্রন্টলাইন। এসব আগ্রাসনে প্রতিদিনই বহু নিরীহ মানুষ হতাহতের শিকার হচ্ছেন।’
গ্রেটার ইসরাইলের ধারণাটি সব ইসরাইলি সমাজে গেঁথে থাকায় সরকার থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী পর্যন্ত সবাই এর সমর্থন করে। তাই সীমানা বাড়ানোর জন্য ইসরাইল আগ্রাসী দখলদারিত্বের পথে হাঁটতে থাকলে, অদূর ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা কমার চেয়ে আরও বাড়বে বলেই শঙ্কা বিশ্লেষকদের।