অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে তাণ্ডব চালানোর পর এবার আরও একবার ইসরাইলি বর্বরতা দেখলো মধ্য গাজার বাসিন্দারা।
রোববার (১৮ আগস্ট) মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল বালাহ ও নুসেইরাত এর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে একযোগে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। হামলা জোরদার করা হয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আশপাশেও এলাকাতেও। এতে ঘটনাস্থলেই নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এর আগে একইদিনে দেইর আল বালায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় একই পরিবারের ১৮ জনসহ নিহত হন অন্তত ২২ জন। বর্বরোচিত ওই হামলায় রেশ না কাটতেই কয়েক ঘন্টার মাথায় হামলা চালানো হয় নুসেইরাতে।
গাজার মধ্যাঞ্চলজুড়ে ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবের মধ্যেই রোববার তেল আবিব সফরে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। গাজায় চলমান সংঘাত শুরুর পর এটি ব্লিংকেন দশম তেল আবিব সফর। যুদ্ধবিরতি আলোচনায় গতি আনতে এবং ইসরাইলি প্রশাসনের ওপর চাপ তৈরি করতেই কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবেই এ সফর বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সোমবার (১৯ আগস্ট), ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, 'আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত পার করছি। জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে আমি এখানে এসেছি। চলমান পরিস্থিতিতে নতুন করে আর যেন উত্তেজনা না বাড়ে, কেউ যেন কোন উস্কানি দিতে না পারে, সর্বপরি যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়াকে কেউ যেন বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেলক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি আমরা'।
এই যখন অবস্থা তখন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়াকে বারবার বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছে হামাস। গোষ্ঠীটির মতে, ইসরাইলি প্রশাসনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণেই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সব প্রচেষ্টা বারবার ভেস্তে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির বিষয়টিকে এই মুহূর্তে একটি 'বিভ্রম' হিসেবে উল্লেখ করে, বিবৃতিতে বলা হয় এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন যুদ্ধবিরতি বা সমঝোতার সুযোগ তৈরি হয়নি। বরং যুদ্ধবিরতির নামে যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসকে বাধ্য করা হচ্ছে। যদিও আগামী দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অন্যদিকে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, গাজায় ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তিতে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আলোচনা অত্যন্ত জটিল পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে কোন বিষয়ে ছাড় দেয়া যায়, আর কোন বিষয়ে ছাড় দেয়া সম্ভভ নয় তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।