মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ত্রিমুখী সংঘাতে জড়াতে পারে ইসরাইল-লেবানন-ইরান

হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুতে উত্তাল হয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা ইসরাইলের সাথে ত্রিমুখী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে লেবানন ও ইরান। তাদের দাবি, গেল কয়েক মাস ধরে ইসরাইলের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, হামাস প্রধানের ওপর হামলার কৃতিত্ব পরোক্ষভাবে তাদেরই। এদিকে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সেনারা প্রস্তুত আছে।

হামলার দায় স্বীকার না করলেও হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য। আর হামাস নেতার ওপর হামলা নিয়ে কোনো বিবৃতি না দিলেও লেবাননের বৈরুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরান সমর্থিত সংগঠন হিযবুল্লাহ'র নেতার মৃত্যুতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। যদিও তিনি বলেছেন, ইসরাইল নতুন করে কারোর সাথে যুদ্ধে জড়াতে চায় না।

ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, 'গত রাতে বৈরুতে আমাদের অবস্থান সুসংবদ্ধ ছিল। ফলাফলও এসেছে উঁচু মানের। যদিও আমরা যুদ্ধ চাই না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর মানে, যেকোনো সময়ে আপনাকে প্রয়োজন হতে পারে। আমরা প্রতিটি স্তরে কাজ করে যাচ্ছি।'

তবে, লেবানন সীমান্তে ইসরাইলি হামলা, রাষ্ট্রীয় অতিথিদের সুরক্ষার বিষয়ে ইরানের ব্যর্থতা, যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা, হামাসের প্রতিশোধ- সব কিছুকে ছাপিয়ে এখন আলোচনায় আছে মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার পর ইসরাইলকে দমানো আগের চেয়ে কঠিন হবে।

লেখক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ আকিভা এলদার বলেন, 'এই হামলা প্রমাণ করে ইসরাইলের সক্ষমতা ৭ অক্টোবরের পর থেকে অনেক বেড়েছে। তারা এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো শহরে হামলা চালাতে পারে। তারা যেকোনো মুহূর্তেই হামলা করতে পারে। ইসরাইলকে প্রতিহত করা আগের চেয়েও কঠিন হবে।'

সংগঠনের প্রধান নিহত হওয়ায় হামাসের যুদ্ধনীতিতে কিছু পরিবর্তন আসবে বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, হামলাকারী প্রতিপক্ষের সর্বোচ্চ নেতাকে আক্রমণের মাধ্যমে অনুসারীদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। তবে, সংগঠনের নেতৃত্ব কার কাছে যাচ্ছে- তার ওপরের নির্ভর করছে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ।

ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসির জ্যেষ্ঠ গবেষক বেনহেম বেন তালেবলু বলেন, 'সবার নজর এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। হামাস প্রধানের মৃত্যু নয়, কে হতে যাচ্ছে হামাসের নতুন প্রধান- তা নিয়েই সবার আগ্রহ। কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে, ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে কী প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। এছাড়া, ইসরাইলের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের যে সব দেশ সংগঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে- তারাও থাকবেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।'

বিশ্লেষকদের দাবি, হানিয়ার মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল বিরোধী রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে যাচ্ছে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ফিলিস্তিনের গাজায়। তবে, নেতার মৃত্যুতে হামাসের প্রতিশোধ, নাকি নেতৃত্বহীন সংগঠনের বিরুদ্ধে ইসরাইলের উত্থান? ফলাফল যাই হোক, রক্তপাত এড়ানো কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসএস