পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন করার ঘোষণা অনেকবারই দিয়েছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিধর দেশটির কাছে রয়েছে ৩ হাজারের বেশি স্বল্প, মধ্য ও দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। অনেক বিশ্লেষকের ধারণা, খামেনি প্রশাসনের ভাণ্ডারে ইতোমধ্যেই যুক্ত হয়েছে পরমাণু অস্ত্র। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সের তথ্যমতে সামরিক শক্তিমত্তার দিক থেকে বিশ্বের ১৪তম শক্তিধর রাষ্ট্র ইরান, ৩ ধাপ পিছিয়ে ইসরাইলের অবস্থান ১৭তম।
তবে পরাক্রমশালী ইরানকে নিজ দেশেই নিয়মিত ধরাশায়ী করছে ইসরাইলের গোয়েন্দারা। এর সবশেষ সংযোজন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে গাইডেড মিসাইল হামলার মাধ্যমে তেহরানে এক সেনা বাসভবনে হত্যা করা হয় বর্ষীয়ান এই নেতাকে। ইরানের রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসমাইল হানিয়ার হত্যার পর বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
ইরান কিংবা দেশটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হত্যায় ইসরাইলের সফলতা পাল্লা অনেক ভারী। যার শুরু হয় ১৯৫৬ সালে, গাজায় এক মিশরীয় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাকে কোরআনে লুকিয়ে রাখা বোমা হামলার মাধ্যমে। গেল এপ্রিলে সিরিয়ার ইরানি কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হত্যা করা হয় ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডসের শীর্ষ কমান্ডার মোহাম্মাদ রেজা জাহেদিকে। এর একমাস আগে সিরিয়ার হত্যা করা হয় আরেক আইজিআরসি'র আরেক শীর্ষ কমান্ডার রাদা জারাইকে।
হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন, সহ-প্রতিষ্ঠাতা আব্দেল আজিজ আল রানতিসি কিংবা শীর্ষ নেতা সালেহ আল আরৌরিকে হত্যার সঙ্গেও জড়িয়ে আছে ইসরাইলের নাম। শুধু বিদেশ বিভুঁইয়েই নয়, ইরানেও হত্যার শিকার ইসরাইল প্রতিরোধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। ২০২০ সালে দেশটির পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে তেহরানের জনবহুল রাস্তায় রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগানের মাধ্যমে হত্যা করা হয়।
ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বাঙ্গনে লজ্জার মুখে ইরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজ দেশের জনগণের আস্থা ফিরে পেতে শিগগিরই ইসরাইলে হামলা চালাবে আয়াতুল্লাহ খামেনি প্রশাসন। তবে বড় প্রশ্ন হলো হামলার ধরণ কেমন হবে। কারণ এর ওপরই নির্ভর করবে মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যত।