শোক ও বেদনার মধ্যেই রমজান মাসের রোজা ও ইবাদত পালন করছেন ফিলিস্তিনিরা। রমজান মাস ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ যখন নানা আয়োজনে ব্যস্ত, তখন গাজায় বেজে উঠছে যুদ্ধের আর্তনাদ। যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন সবাই।
প্রায় ১৬ মাসের যুদ্ধে গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি, মসজিদ, স্থাপনা সব গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়ালিরা। নামাজ পড়ারও জায়গা নেই তাদের। গাজার রাফাহ অঞ্চলে ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই সমবেত হয়ে একসঙ্গে ইফতার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ।
গাজায় বসবাসকারীদের মধ্যে একজন বলেন, 'আজ বহু ফিলিস্তিনির আবাসস্থল নেই, বসার জন্য ঘর নেই। তাদের জন্য আমরা এই আয়োজন করেছি। যেখানে বিনামূল্যে সবাইকে ইফতার দেয়া হচ্ছে।'
স্থানীয় একজন বলেন, 'প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও মানুষের মুখে কিছুটা হাসি ফুটে উঠেছে।'
এদিকে রোজা শুরু হতেই গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। গাজায় প্রবেশের অনুমতির অপেক্ষায় মিশরের রাফা সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে ত্রাণের ট্রাকগুলো। সব জিম্মিদের মুক্তি বিনিময়ে রমজান মাসজুড়ে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রস্তাব দেয় ইসরাইল। তবে হামাস বলছে, মানবিক সহায়তার ট্রাক আটকে দিয়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে ইসরাইলিরা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এমনিতেই নিত্যপণ্যের তীব্র সংকট। এরমধ্যেই রোজা ঘিরে জিনিসপত্রে দাম বেড়েছে বহুগুণ। পবিত্র মাসের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে ফিলিস্তিনিদের। যে যা পারছেন সাধ্যমতো সেহরি ও ইফতার সামগ্রী কিনছেন। এতকিছুর পরও নিরাপদে বসবাস করাই তাদের একমাত্র চাওয়া।
স্থানীয় একজন বলেন, 'এবারের রমজান দুঃখ, যন্ত্রণা ও ক্ষত এ পরিপূর্ণ। প্রতিটি বাড়িতে একজন শহীদ আছেন।'
গাজা অঞ্চলে বাস করা একজন বলেন, 'জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। প্রায় প্রতিটি জিনিসের দাম তিনগুণ বেড়েছে।'
স্থানীয় অন্য একজন বলেন, 'মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একেবারে নেই। কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েও অনেকে খালি হাতে ফিরছেন।'
গাজায় পবিত্র রমজান ঘিরে কোন আমেজ নেই, নেই উৎসবের রঙ। তবুও সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে ধ্বংসস্তূপের মাঝে, রাস্তায়, তাঁবুর নিচে তারাবির নামাজ আদায় করছেন ফিলিস্তিনিরা।