একদিনের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৪% বেড়েছে

0

হুতিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের হামলা শুরুর পর বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়তে শুরু করেছে। একদিনের ব্যবধানে এক লাফে তেলের দাম ৪ শতাংশ বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাস ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

বিশ্ব নৌ-বাণিজ্যের বড় অংশ লোহিত সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে চলে। এই নৌপথে প্রায় ৭০ শতাংশ তেল, গ্যাস ও রাসায়নিক পদার্থ পরিবহন হয়ে থাকে। ট্যাঙ্কার মালিকদের সমিতি ইন্টারট্যাঙ্কো বলছে, নিরাপত্তার ভয়ে জাহাজগুলো এখন দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব হোপ প্রণালী বেছে নিচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনে ১০ দিন বেশি সময় লাগছে, যার প্রভাব বিশ্ব বাজারের জ্বালানির দামে পড়ছে।

লোহিত সাগরে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৭টি ড্রোন ও রকেট হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তাদের একের পর এক হামলায় বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এই সমুদ্রপথ। জাহাজগুলোর সুরক্ষায় এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী। হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় একদিনে প্রায় ৩০টি হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। দ্বিতীয় দিনে হুতিদের রাডার স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। লোহিত সাগরে চলাচলরত জাহাজ শনাক্তে এসব রাডার ব্যবহার করে হুতিরা।

এদিকে হামলার পর বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেল ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। এতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতেও চাপ পড়ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তেল ব্যারেলে ১০ ডলার পর্যন্ত বাড়ার শঙ্কা করছে দেশটি।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, আমাদের লক্ষ্য খুব পরিষ্কার। এই অঞ্চলের উত্তেজনা কমিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা। আত্মরক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে কাজ করছে। এখন হুতিদের দায়িত্ব এই হামলা বন্ধ করা। তারা মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় তেলের দাম যে পর্যায়ে গিয়েছিল আবারও সে অবস্থায় যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় তেলের দাম বাড়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইরানকে এরইমধ্যে বার্তা দেয়া হয়েছে, তারা কিছুই করতে পারছে না। হুতিরা যতদিন পর্যন্ত তাদের হামলা ও অপকর্ম বন্ধ না করবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চালিয়ে যাবে।

এদিকে জাতিসংঘ বলছে, সমুদ্রপথে বাধার কারণে শুধু জ্বালানি নয় দাম বাড়বে জরুরি খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপণ্যের। বিপর্যয় ডেকে আনবে বিশ্ব অর্থনীতি ও মানবিক সহায়তায়। বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো বলছে, পশ্চিমাদের পাল্টা হামলায় এরইমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে নানা সংকট দেখা দিচ্ছে।

হুতিরা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলায় তাদের ৫ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তারা এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেবে। লোহিত সাগরে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা বন্ধ না করার ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র এই গোষ্ঠী।