এশিয়া
বিদেশে এখন
0

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল গ্রেপ্তার

অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিসংশিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। বাসভবনে কাঁটাতারের বেড়া, সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতিও তাকে রক্ষা করতে পারেনি। যদিও ইওলের দাবি, রক্তপাত এড়াতেই তিনি তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুর্নীতি তদন্ত অফিসে রাখা হবে। এদিকে তার গ্রেপ্তারের খবরে উল্লাসে মেতেছেন ইওল বিরোধীরা।

সামরিক আইন জারির দায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অভিসংশিত হলেও রাষ্ট্রীয় বাসভবনেই অবস্থান করছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তদন্ত চলছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে কয়েক ঘণ্টার অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ইওলের নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়।

অবশেষে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশটির ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার হলেন। নিজের সরকারি বাসভবনে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

বাসভবনের সামনে কাঁটাতারের বেড়া ও বাস দিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেন নি ইওল। পরে মই বেয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এ সময় তারা ইওলের সমর্থকদের বাধার মুখে পড়েন। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। তাকে গ্রেপ্তারে ৩ হাজারের বেশি পুলিশ তার বাসভবন ঘিরে রাখে।

গ্রেপ্তারের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইওলকে বহনকারী একটি গাড়িবহর তার বাসভবন থেকে বের হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রাজধানী সিউলের দক্ষিণাঞ্চলে দুর্নীতি তদন্ত অফিসে নেয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেখানে ৪৮ ঘণ্টা রাখা হবে। যদিও তাকে ২০ দিনের জন্য আটক রাখার আবেদন করা হয়েছে। আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে মুক্তি দেয়া হতে পারে।

যদিও প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলছেন তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অবৈধ। যা দুর্ভাগ্যজনক। গ্রেপ্তারের আগে নিজ বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, রক্তপাত এড়াতেই তিনি তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থিত হয়েছেন।

দক্ষিণ কোরিয়া অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলেন, ‘তারা সব ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে রাষ্ট্রীয় ভবনে প্রবেশ করে। রক্তপার ও সংঘাত এড়াতে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে রাজি হয়েছি। যদিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও তদন্ত কার্যক্রম অবৈধ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া মানেই অপরাধ স্বীকার করা নয়।’

এদিকে, ইওলের গ্রেপ্তারের খবরে উল্লাসে ফেটে পড়েন বিরোধীরা। রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল করেন বহু বাসিন্দা। যদিও, উল্টো চিত্রও দেখা গেছে কোথাও কোথাও। ইওলের গ্রেপ্তারের খবরে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে অনেককে।

গেল ৩ ডিসেম্বর সবাইকে হতবাক করে দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক-ইওল। তীব্র প্রতিবাদের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন তিনি। এর পরপরই রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয় গোটা দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রানিং কোনো প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার হলেন।

এএম