পরমাণু ইস্যুতে ক্রমশ ঘোলা হচ্ছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ইরানের সম্মতি | এখন
0

আবারো আলোচনায় ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক। পরমাণু ইস্যুতে ক্রমেই জল ঘোলা হচ্ছে দুই পরাশক্তির। ওয়াশিংটনের কথামতো তেহরান যদি তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ না রাখে, তবে দেশটিতে সেনা অভিযান পরিচালনার হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। আর সেই অভিযানে নেতৃত্ব দেবে ইসরাইল। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি আঘাতে পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।

গাজার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টি এখন ইরানের দিকে। শিয়া অধ্যুষিত মুসলিম এই দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে গেল কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ওভাল অফিসের যে কোন কার্যক্রমেই ঘুরে ফিরে ট্রাম্পের মুখে শোনা যাচ্ছে ইরান নিয়ে কথাবার্তা। জানান, পরমাণু ইস্যুতে শনিবার ওমানে ইরানের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবে মার্কিন প্রতিনিধি দল।

তবে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র এ বৈঠক নিয়ে এখনও কাটেনি ধোঁয়াশা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোন সরাসরি বৈঠক নয় বরং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় পরমাণু ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তবে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এখনও অনড় অবস্থানে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও নড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসবো আমরা। তবে একটি বিষয় বলতে চাই, ইরান নিউক্লিয়ার বোমা তৈরি করে না। বিষয়টি হাজার বার তদন্ত করে দেখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।’

যুক্তরাষ্ট্র চায়, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরবে। তবেই ইরান থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে ওয়াশিংটন। অন্যথায় তাদের ওপর সামরিক অভিযান চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর এতে নেতৃত্ব দেবে ইসরাইল। বুধবার (৯ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে নির্বাহী আদেশ সইয়ের সময় এমন হুঁশিয়ার ট্রাম্পের।

ট্রাম্প বলেন, ‘প্রয়োজনে ইরানের ওপর মিলিটারি অপারেশন চালানো হবে। অবশ্যই ইসরাইল অন্তর্ভুক্ত থাকবে সেই অভিযানে। এমনকি ইসরাইল নেতৃত্ব দেবে ইরানের বিরুদ্ধে হামলায়।’

ট্রাম্পের এমন হুমকির পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলো ইরান। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি আঘাতের জবাব কয়েকগুণে ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানায় তেহরান।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। তবে আমাদের যে সক্ষমতা আছে তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর দোসরদের শক্ত হাতে প্রতিহত করার ক্ষমতা রয়েছে। তারা যত বেশি আঘাত করবে, তার কয়েকগুণ জোড়ালো জবাব দেবো আমরা।’

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার মধ্যে ইরানের পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। দুই পরাশক্তি তাদের জায়গা থেকে সিদ্ধান্তে অটল থাকলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে মহাবিপদ, এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।

ইএ