রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। সীমান্ত এলাকায় অব্যাহত আছে বিশেষ সামরিক অভিযান। শুক্রবারের অভিযানের পর নিয়মিত প্রতিবেদনে রুশ গোয়ান্দাদের দাবি, জেলেনস্কির সেনাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়েছে পুতিন বাহিনী। এছাড়াও, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সহায়তায় ধ্বংস করা হয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাদের ছোঁড়া অসংখ্য মিসাইল, রকেট ও ড্রোন।
প্রায় আড়াই বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, সেনা সক্ষমতা বাড়াতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে উভয়পক্ষ। এবার, চলমান সংঘাতের নিয়ন্ত্রণ নিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের নতুন করে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে মস্কো। স্বেচ্ছায় যে সব কর্মকর্তা যুদ্ধে যেতে রাজি হচ্ছেন তাদেরকে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত বোনাস দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। যা বর্তমান সেনাকর্মকর্তাদের মাসিক বেতনের প্রায় ২২ গুণ।
রাশিয়ার কর্মকর্তাদের একজন বলেন, ‘গেল সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ আমি চুক্তিতে সম্মত হয়েছি। এর আগে ৬ মাস ধরে আমি মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বারবার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেবেছি। যখন দেখলাম শত্রুপক্ষ চুপ করে বসে নেই। সীমান্ত পেরিয়ে তারা আমাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করছে, তখন আর বসে থাকতে পারলাম না।’
পুতিন বাহিনী ঘুরে দাঁড়ালেও নিজ সেনাদের মনোবল ধরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সুমাই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের সাথে বৈঠক করেন তিনি। সেনা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, কুরস্কের সাফল্য ধরে রাখাই হবে কিয়েভের প্রধান লক্ষ্য।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘কুরস্ক অভিযানে সাফল্যের জন্য আপনাদের ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাই। কমান্ডার থেকে সাধারণ সেনা সবাইকে অভিনন্দন। যুদ্ধে জয়ী হওয়া সহজ নয়। কঠোর পরিশ্রম ও মনোবল প্রয়োজন। গোটা বিশ্বকে জানাতে পেরেছি, ইউক্রেন তার প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আমি জানি, এটাই সত্যি।’
এদিকে, রুশ সেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয়ার পাশাপাশি একের পর এক গোপন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনারা। শুক্রবার জেলেনস্কি যখন সেনা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করছিলেন, ঠিক সেসময় জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে এক রুশ কর্মকর্তা নিহত হন। হামলার দায় স্বীকার করে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, নিহত ঐ ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধ করেছিলেন।