কৃষ্ণসাগরে হামলা বন্ধে রাজি ইউক্রেন-রাশিয়া, তবে চুক্তি এখনো অনিশ্চিত

এশিয়া
বিদেশে এখন
0

অবশেষে কৃষ্ণসাগরে হামলা বন্ধে রাজি ইউক্রেন ও রাশিয়া। তবে চুক্তি সই এখনও অনিশ্চিত। জেলেনস্কিকে বিশ্বাস নেই উল্লেখ করে মস্কো বলছে, তাকে চুক্তির শর্ত মানতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি নির্দেশ দিলে তবেই হবে চুক্তি সই। চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় এখনও অনির্ধারিত, অভিযোগ কিয়েভের।

তিন বছরের যুদ্ধে ইতি টানতে রিয়াদে মস্কো আর কিয়েভের প্রতিনিধি দলের সাথে দফায় দফায় বৈঠক সেরেছে ওয়াশিংটন, তবে আলাদাভাবে। আলোচনার টেবিলে একবারও মুখোমুখি হয়নি যুদ্ধরত দুপক্ষই। তাও টানা তিন দিনের ম্যারাথন আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত সম্মতি এলো কৃষ্ণসাগরে সমুদ্রপথে অস্ত্রবিরতির বিষয়ে।

আলোচনার মতোই চুক্তিও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলাদাভাবে সই করবে ইউক্রেন ও রাশিয়া। চুক্তি কবে নাগাদ কার্যকর হতে পারে, সে বিষয়টি অনিশ্চিত। টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদে শান্তি রক্ষায় সব পক্ষ অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া আর ইউক্রেনের সাথে আমরা গভীর আলোচনায় আছি। আমি বলবো যে ভালোই চলছে। কিন্তু এটা আসলে এমন একটা পরিস্থিতি যেটা নিয়ে কখনো ভাবতে হবে, সেটাই আমরা ভাবিনি। যা কখনো হওয়াই উচিত হয়নি। তাও আমরা আলোচনায় এগোচ্ছি, এটাই আপাতত বলতে পারি। খুব দীর্ঘ আলোচনা চলছে এবং দু'দিক থেকেই বিস্তারিত কথাবার্তা হচ্ছে।’

গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নৌপথ আবারও চালু করার লক্ষ্যে কৃষ্ণসাগরে নিরাপদ জাহাজ চলাচল নিশ্চিতে ইচ্ছুক রাশিয়াও। এর মাধ্যমে স্থায়ী অস্ত্রবিরতির দিকে আরেক ধাপ এগোবে বলে মনে করছে ইউক্রেনও। তবে চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে নির্দেশ দিলে তবেই চুক্তিতে সই করবে বলে শর্ত বেঁধে দিয়েছে রাশিয়া।

অন্যদিকে, চুক্তিতে সম্মত হলেও শর্ত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘রিয়াদে আলোচনা শেষ। প্রাথমিক ফল রুশ ও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানানো হচ্ছে। পুতিন ও ট্রাম্প আগেই একমত হয়েছেন যে কৃষ্ণসাগর নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাবে। আমাদের সহজ কথা। জেলেনস্কিকে আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের সুস্পষ্ট নিশ্চয়তা লাগবে। ওয়াশিংটন তাকে সরাসরি নির্দেশ দিলে তারপর রাশিয়া চুক্তিতে সই করবে।’

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘সামুদ্রিক অস্ত্রবিরতি ও নিরাপদ জাহাজ চলাচলে সম্মত হয়েছি আমরা। কিন্তু কেউ চুক্তি লঙ্ঘন করলে কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমি বুঝি কারণ। এটা প্রথম চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র চায় না কোনোভাবেই এটা আটকে যাক। এজন্য তারা অনেক বিস্তারিত এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ, নিষেধাজ্ঞা- অনেক বিষয়ে আমাদের উত্তর দরকার।’

রুশ খাদ্যপণ্য ও সার রপ্তানি, আর ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের আগে চুক্তি সই করবে না বলে সাফ জানিয়েছে মস্কো। বিশ্ববাজারে রাশিয়ার পুনঃপ্রবেশ নিশ্চিতে সহযোগিতা করবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী ওয়াশিংটন। রাশিয়া সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করলে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা আরও বাড়াতে চাপ দেবেন জেলেনস্কি।

এসএইচ