দিন যত যাচ্ছে বাড়ছে অস্ত্রের ব্যবহার ও চাহিদা। পৃথিবীজুড়েই এখন অস্ত্র ব্যবসা জমজমাট। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অস্ত্রের নানামুখী ব্যবহার বেড়েছে। এই খাতে বাড়ছে বিনিয়োগ। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষায় অস্ত্র ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে প্রতিবেশী দেশগুলো।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপে অস্ত্র আমদানি বেড়েছে দ্বিগুণ। বিশ্বজুড়ে অস্ত্রের বড় চালানটি আসে এশিয়া মহাদেশে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার, মিশর ও সৌদি আরব বৈশ্বিক আমদানির ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন, রাশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে।
গত ৫ বছরে অস্ত্র আমদানির শীর্ষ অঞ্চল। ছবি: এখন টিভি
প্রতিবেদনে ২০১৪-১৮ এবং ২০১৯-২৩ সালের মধ্যে অস্ত্র আমদানি-রপ্তানির তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে। গত ৫ বছর ধরে অস্ত্রের বড় ক্রেতা ভারত। জাপান তার অস্ত্রের আমদানি আড়াইগুণ বাড়িয়েছে। উত্তর কোরিয়া ও চীনের সঙ্গে আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে নিজেকে শক্তিশালী করছে জাপানিরা। সৌদি আরব ও আমিরাত পশ্চিমাদের কাছ থেকে যুদ্ধ বিমান কেনার চুক্তি করার পর কাতার তার অস্ত্র আমদানি চারগুণ বাড়িয়েছে। অস্ত্র আমদানির পঞ্চম বৃহত্তম দেশ পাকিস্তান।
গত ৫ বছরে শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। ছবি: এখন টিভি
যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের বাজার আরও বড় হয়েছে। গত ৫ বছরে দেশটির অস্ত্র বিক্রি ৮ শতাংশ বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অস্ত্র বিক্রিতে একসময় যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পর দেশটির রপ্তানি প্রায় ৫০ ভাগ কমে গেছে। অস্ত্র রপ্তানি অর্ধেকের বেশি বাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফ্রান্স। ইতালিও তাদের রপ্তানি দ্বিগুণ করেছে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৩১ শতাংশ অস্ত্র রপ্তানি করেছে ইউরোপ। অন্যদিকে, চীনের ৬০ ভাগ অস্ত্র যায় পাকিস্তানে বাকিগুলো যায় থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশে।
গত ৫ বছরে শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। ছবি: এখন টিভি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপ নিজেদের সুরক্ষায় অস্ত্র ও গোলাবারুদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চেষ্টা চালাচ্ছে। রাশিয়ার সরঞ্জাম থেকে ভারত ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফ্রান্স ও ইসরাইলের মতো দেশ থেকে অস্ত্রের আমদানি বাড়িয়েছে ভারত।