বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশের মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ান চার ড্রাগনের পাশাপাশি টাইগার অর্থনীতির দেশ হিসেবেও দেশটির পরিচিতি রয়েছে। ৩৮ হাজার ৬৯০ বর্গমাইল আয়তনের দেশটিতে পাড়ি দিতে এখন অপেক্ষা বাংলাদেশের হাজারও তরুণের।
নাটোর সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের তরুণ মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ তাদের একজন। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে যেতে চান দক্ষিণ কোরিয়া। ইতোমধ্যে দেশটির ভাষাও শিখে নিয়েছেন তিনি। সব কার্যক্রম শেষ করে এখন যাবার অপেক্ষা। বলেন, 'উচ্চ বেতন এবং নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কোরিয়া যাচ্ছি।'
আব্দুল্লাহ'র মতো অপেক্ষায় নাটোরের পাঁচ শতাধিক যুবক। শুধু ২০২৩ সালেই নাটোর থেকে শারীরিক পরীক্ষাসহ যাবতীয় কাজ শেষ করেছেন অন্তত ৩০৭ জন। এরপর বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস এর মাধ্যমে নির্বাচিত হবার অপেক্ষা।
তাদের একজন বলেন, 'পরিবারের পাশাপাশি নিজের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য আমি কোরিয়া যেতে চাই।'
শিক্ষার্থীদেরকে কোরিয়ান ভাষা শিক্ষা দিচ্ছেন এক প্রশিক্ষক
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পার করতে হয় ১০ থেকে ১২টি ধাপ। এসব ধাপের মধ্যে অন্যতম দেশটির ভাষা শিক্ষা। ৩ মাস ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষণ নিতে গুণতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'কোরিয়া সরকার একদম ফ্রিতে যাওয়ার খুব সুন্দর একটা সুযোগ দিয়েছে। লটারির মাধ্যমে নাম উঠলে পরীক্ষা দিয়ে কোরিয়াতে যাওয়া যায়। অন্যান্য দেশ থেকেও উন্নত দেশ এবং তিন থেকে চার লাখ টাকা বেতন।'
ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি অন্যান্য পরীক্ষায় পাশ করে দালাল ছাড়াই মাত্র লাখ টাকা খরচ করে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া সম্ভব। তবে নতুন শর্ত অনুয়ায়ী নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে এসএসসি পাশ।
২০২৪ সালে বিশ্বের ১৬টি দেশ থেকে মোট ১ লাখ ৬৫ হাজার জনশক্তি নিবে দক্ষিণ কোরিয়া। সে হিসেবে শুধু এই বছর বাংলাদেশ থেকে যাবে অন্তত ১০ হাজার তরুণ। এছাড়া ২০২২ ও ২০২৩ সাল মিলে অপেক্ষার তালিকায় রয়েছে অন্তত ১৬ হাজার যুবক।
নাটোর কোরিয়ান ল্যাংগুয়েজ সেন্টারের পরিচালক ওলি আহমেদ বলেন, 'আমরা কোরিয়ানদের সাথে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে সব রকম সুযোগ-সুবিধা করে দেয়ার পাশাপাশি সকল প্রশ্ন সমাধান করে দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেই। তাদের পাঠানোর দায়-দায়িত্ব সব সরকারের।'
অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকা যুবকরা পাড়ি জমাবেন টাইগার অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেইসাথে কাটবে নিজেদের বেকারত্ব। সংসারে ফিরবে স্বচ্ছলতা। তবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ বৃদ্ধির পাশাপাশি শক্তিশালী হবে স্থানীয় অর্থনীতিও।