আজ (বুধবার, ২ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কমিটির সভায় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভাশেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'দেশে কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য সারের সমস্যা হবে না। এছাড়া গ্যাসের চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এ দু'টি বিষয়ই সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।'
সভা সূত্র জানায়, সভায় 'পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮' অনুসরণে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (২০২৪ সালের ২৬তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এলএনজি কেনার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়।
পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। চারটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩.৫৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৬৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮০ টাকা।
সভায় 'পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮' অনুসরণে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (২০২৪ সালের ২৭তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। তিনটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের-এর কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩.৭৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৬৪৯ কোটি ৫৯ লাখ ১৪ হাজার ৮৮০ টাকা।
সূত্র জানায়, সভায় সৌদি আরব থেকে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২৪ সালের ১১ জুন হওয়া অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিকটন ৩৪৬.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট এক কোটি তিন লাখ ৮৯ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৪ কোটি ৬৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে চতুর্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের পরিকল্পনা মোতাবেক কাফকো থেকে ৫.৪০ লাখ মেট্রিকটন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে চতুর্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো প্রাইস অফার পাঠায়।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের দাম নির্ধারণ করে চতুর্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিকটন ৩৩৫.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ব্যয় হবে এক কোটি ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে ষষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন টিএসপি সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক মরক্কো থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে টিএসপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তসমূহ অভিন্ন রেখে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখে আবারও চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে মরক্কো থেকে ষষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিকটন টিএসপি সারের বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যে সর্বমোট ব্যয় হবে এক কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিকটন টিএসপি সারের দাম ৪১৫ মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে দশম লটে ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিএডিসি কর্তৃক সৌদি আরবের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তসমূহ অভিন্ন রেখে ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট তারিখে পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরব থেকে দশম লটে ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে সর্বমোট দুই কোটি ৩২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিকটন ডিএপি সারের দাম ৫৮১ মার্কিন ডলার।