বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রর ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদুৎকেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট হলেও বেশিরভাগ সময়ই দু'টি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। বাকি একটি ইউনিট ওভার ওয়েলের জন্য বন্ধ থাকে। এর মধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায় ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তিন নম্বর ইউনিটের উৎপাদন।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে তৃতীয় ইউনিটটি চালু হলেও ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওয়েল পাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে আবারও উৎপাদন বন্ধ হয়েছিল। এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে এক নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এ ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, সেটি থেকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। এটি চালু রাখতে ৮০০-৯০০ টন কয়লা প্রয়োজন হচ্ছে। এতে করে বর্তমানে গড়ে দু'টি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদুৎ এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। যা উত্তরের লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রর ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করেন চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সরবরাহকৃত কয়লার ওপর নির্ভর করে এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
অপরদিকে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হতো ৬৫-৭০ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে কয়লা মজুত রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে দৈনিক কয়লা সরবরাহ করা হয় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টন। তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৪ হাজার ৮০০ টন কয়লার প্রয়োজন। তবে তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনও চালানো হয়নি।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, '২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুই নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। চায়না থেকে নতুন ওয়েল পাম্প এনে স্থাপন করে রোববার দুপুর ২টা থেকে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন তৃতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। যা থেকে ২০০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। সংস্কার কাজ শেষে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে এক নম্বর ইউনিটটি থেকে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এ ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও সেটি থেকে প্রতিদিন ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে দু'টি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে।'
এই তৃতীয় ইউনিট চালু পুনরায় হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।