দেশে দিন দিন বেড়ে চলছে নগরায়ন, নিধন হচ্ছে প্রাণ ও প্রকৃতি। যার প্রভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চলতি বছরে বাংলাদেশও দেখেছে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে নগরীর মানুষ ঝুঁকেছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের দিকে। অতিরিক্ত শীতলীকরণ যন্ত্রের ব্যবহারে কিছু মানুষ সাময়িক স্বস্তি পেলেও দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বিদ্যুৎ খাতে, তৈরি হচ্ছে উষ্ণায়ন ও অর্থনীতির দুষ্টচক্র।

ময়মনসিংহে প্রতিমাসেই নষ্ট হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের ২০ শতাংশ মিটার। ওয়ার্কশপে নষ্ট পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার ট্রান্সফরমার। অভিযোগ উঠেছে কমিশন নিয়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রতিবছরই কিনছেন শতশত কোটি টাকার মানহীন যন্ত্রাংশ। এতে বাড়ছে লোডশেডিং অন্যদিকে গ্রাহককে প্রতিমাসেই গুণতে হচ্ছে ভুতুড়ে বিদ্যুৎবিল।

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলএনজি টার্মিনাল মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছে সিঙ্গাপুরে। সেটি ফেরত না আসায় দেশে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট চলছে। তবে চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে এ সংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

পাকিস্তানে রাজধানী করাচিসহ বিভিন্ন শহরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সৌর বিদ্যুৎ। জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের দাম বেশি ও অতিরিক্ত লোডশেডিং যার অন্যতম কারণ বলছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে সৌর বিদ্যুতের দাম কম হওয়ায় সোলার প্যানেল কিনতে ছুঁটছেন পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ।

তিন দশক ধরে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরী। তবে পানি-বিদ্যুৎসহ নানা সমস্যায় লোকসানের মুখে এখানকার অধিকাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ-শিল্প খাতে প্লট বরাদ্দ না দিয়ে বড় কোম্পানিকে গোডাউন ভাড়া দেয়ার।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিলো টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকা। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। দুই দিনের লোডশেডিংয়ে শতকোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাদের।

দু'দিনের ব্যবধানে গতকাল মঙ্গলবার ফের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে ভারত। দাবদাহ চলবে আরও কমপক্ষে ৫ দিন। তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে প্রতিবেশি পাকিস্তানও। আরও প্রায় ১০ দিন এমন গরম থাকবে; ফলে চলতি মাসে দেশটিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন আবহাওয়াবিদরা।

প্রিপেইড মিটার বসানোর পর থেকেই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কাটার অভিযোগ গ্রাহকদের। আপত্তি ডিমান্ড চার্জ নিয়েও। সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচনায় রাঙামাটিতে দিনমজুরের স্ত্রী শাবানা বেগমের ১১০০ টাকার বিল বেড়ে হঠাৎ ৬৪ হাজার টাকা হয়ে যাওয়ার ঘটনা। কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকার নির্ধারিত বিলের বাইরে এক টাকাও অতিরিক্ত কেটে রাখার সুযোগ নেই।

ডলার সংকটের কারণে বন্ধ রাখতে হয়েছে পাওয়ার প্ল্যান্ট। তাই সক্ষমতা থাকতেও এপ্রিলজুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহে লোডশেডিং করতে হয়েছে বলে জানালেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 'এখন টিভি'কে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।

কৃষকের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং নয়, বরং রাজধানীর অভিজাত এলাকায় লোডশেডিং দিতে বিদ্যুতমন্ত্রীকে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।