কুমিল্লা ইপিজেড, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ ক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বর্তমানে ৩০টি বিদেশি, সাতটি যৌথ ও ১১টি দেশীয় বিনিয়োগকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এখানে।
চলতি অর্থবছরের গেলো প্রথম আট মাসেই রপ্তানি হয়েছে ৬৪৬ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, টাকার অঙ্কে যা প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। যা ইতোমধ্যেই আগের অর্থবছরের চেয়ে বেশি। ইপিজেড কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি ছাড়াবে দশ হাজার কোটি টাকা।
কোভিড-পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় ব্যাহত হয় কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম। তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক বলছেন এই কর্মকর্তা।
কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ‘যারা ইপিজেডের পণ্যগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে, তাদের এই পণ্যগুলোর অর্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে শ্রমিক সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের কুমিল্লা ইপিজেডে যেহেতু খালি কোনো প্লট নেই, তাই নতুন বিনিয়োগ সেভাবে না বাড়লেও, যারা পুরানো বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আছে তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।’
বর্তমানে ইপিজেডের ৪৮টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে ৫০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক, যার ৬৫ শতাংশই নারী। তৈরি হচ্ছে গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ, সোয়েটার, ইলেকট্রনিক্স পার্টস, ফুটওয়্যার, সেফটি জ্যাকেটসহ নানা পণ্য।
তবে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত প্লট। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাধ্য হচ্ছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়তে, যা নষ্ট করছে পরিবেশ। তাই অঞ্চলটিকে বাড়িয়ে নতুন প্লট বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।
কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কমিটমেন্ট ঠিকই ছিল, যারা এখানে ব্যবসা করেন তারা কমিটমেন্ট পেয়েছেন। ব্যবসায়ীরা মনে করেন যে শিল্প প্রতিষ্ঠান কুমিল্লাতে হলেই তাদের জন্য ভালো হয়। তবে এখন সীমিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যদি এগুলোর সংখ্যা বাড়ানো হয় তাহলে এখানে আরো অনেক বেশি ক্রেতারা আসবে এবং রপ্তানি বেড়ে যাবে।
আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ‘অনেকেই ইপিজেডের বাইরে শিল্প প্রতিষ্ঠান করছে। আমাদের নতুন যে ইপিজেড হচ্ছে, সেখানেও বিনিয়োগ পাচ্ছি আমরা এবং ইতোমধ্যেই চারটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি শুরু করেছে।’
২৬৭ একরের কুমিল্লা ইপিজেডে রয়েছে ২৪০টি শিল্প প্লট। শুধু রপ্তানিই নয়, নারীর ক্ষমতায়ন, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে এই অঞ্চল।