আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
পাঁচ বছরে নন লেদার জুতা রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণ
পরিবেশগত নানা জটিলতায় চামড়াজাত জুতা রপ্তানি যেখানে নিম্নমুখী সেখানে নতুন সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে নন লেদার জুতা। গত ৫ বছরে এর রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণ।

বিশ্বব্যাপী চাহিদা বাড়ায় গত কয়েকবছরে আলাদাভাবে দেশে নন লেদার জুতার কারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে একটি ময়মনসিংহের সুনিভার্স ফুটওয়্যার। প্রতিষ্ঠানটি মাসে তৈরি করে ২ লাখ জোড়া জুতা, যার শতভাগই রপ্তানি হয়। এতে শুরুতেই নিশ্চিত করতে হয় ভালো মানের কাঁচামাল। যার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আসে চীন থেকে।

সিনথেটিক এসব চামড়াকে শুরুতেই লেমিনেশন ধাপে প্রচ্ছদ ঠিক করা হয়। নকশা আর পুরুত্ব ঠিক রেখে চলে কাটাকাটি। তারপরের ধাপ সেলাই, এই সুয়িং সেকশনেই মান অনুয়ায়ী ২০ থেকে ২৫ জনের হাতবদল হয়।

এই খাতে নতুন সংযোজন সিমলেস মেশিন। ৮ মাস আগে দেশে আনা এই মেশিন বাড়িয়েছে পণ্যের মান। এটি ছাড়াও প্রতিটি ধাপে ইউরোপীয় প্রযুক্তির স্বয়ংক্রিয় মেশিনের ব্যবহার হয় জুতা তৈরিতে। তাতে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমেছে।

কর্মীরা বলছেন, ‘মেশিনের কারণে সহজে কাজ করা যায়। আর একসঙ্গে অনেক কাজ করা যাচ্ছে। আর অনেক নিরাপদে আমরা কাজ করতে পারি।’

সুনিভার্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের প্রোডাকশন ম্যানেজার এস ডি বাপ্পি বলেন, ‘আমাদের যে জনশক্তি আছে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়েছে। আর তারা বেশ দক্ষতার সঙ্গে কারখানায় জুতা উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছে।’

সাশ্রয়ী দাম, টেকসই ও ফ্যাশনেবল হওয়ায় এ ধরনের জুতার চাহিদা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে। বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকার মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে। সেই সাথে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা কম থাকায় এই শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত ৫ বছরে নন লেদার ফুটওয়্যারের রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণ। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর রপ্তানি হয়েছে ৪৮ কোটি ডলার। যেটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিলো ২৭ কোটি ডলারের কিছু বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে এই পণ্য ২০টির মতো দেশে যাচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, ‘প্রতিবছরই এই জুতার গ্রোথ হচ্ছে। আর ইউরোপ-আমেরিকায় এই জুতার ডিমান্ড আরও বেশি।’

ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘চীন থেকে বড় কোম্পানিগুলো মুখ ফিরিয়ে বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। এই চাহিদা পূরণে এখন দেশের প্রয়োজন পর্যাপ্ত কাঁচামাল আর দক্ষ জনবল।’

ইপিবির আশা, মেইড ইন বাংলাদেশের নতুন বাহক হবে নন লেদার ফুটওয়্যার। একইসঙ্গে হতে পারে বাণিজ্য বহুমুখীকরণের ভালো উদাহরণ।

এওয়াইএইচ