বাংলাদেশি সিমেন্টের চাহিদা ভারতের ত্রিপুরায়

0

চলতি অর্থবছরে রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরে। সেখানে সবচেয়ে সিমেন্ট বেশি আশা জাগিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশি সিমেন্টের বড় বাজার তৈরি হয়েছে ভারতের ত্রিপুরায়। ফলে দিন দিন এ নির্মাণ সামগ্রীটির রপ্তানিও বাড়ছে বন্দর দিয়ে।

আখাউড়া স্থলবন্দরে সিমেন্টভর্তি সব ট্রাকের গন্তব্য হয় প্রতিবেশি দেশ ভারতে। দেশটির ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ টন সিমেন্ট রপ্তানি হয় এ স্থলবন্দর দিয়ে। আর প্রতি টনের রপ্তানিমূল্য ৭৯ থেকে ৮৬ মার্কিন ডলার।

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যে কয়েকটি পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে- তারমধ্যে অন্যতম হিমায়িত মাছ, সিমেন্ট, প্লাস্টিক ও খাদ্যসামগ্রী। তবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়া পণ্যের তালিকায় মাছের পরেই সিমেন্টের অবস্থান। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছিল ২১ হাজার ৭২০ টন সিমেন্ট। যার রপ্তানি মূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে গত জানুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১১ হাজার টন সিমেন্ট। এর রপ্তানি মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।

বর্তমানে যেসব কোম্পানির সিমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে ত্রিপুরায়, তারমধ্যে অন্যতম ক্রাউন সিমেন্ট, সেভেন রিংস, প্রিমিয়ার, ইনসি ও শাহ সিমেন্ট। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশি সিমেন্টের গুণগত মান ভালো হওয়ার পাশাপাশি ত্রিপুরায় সিমেন্ট কারখানা না থাকায় এখানকার সিমেন্টের চাহিদা বাড়ছে।

স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'বাংলাদেশি সিমেন্টের উপর তাদের একটা ভালো আস্থা আছে সেজন্য তারা বাংলাদেশি সিমেন্ট বেশি ব্যবহার করে। ত্রিপুরাতে অনেকে মার্কেটিং করছে। আশা করি আমাদের সিমেন্টের প্রসার ধীরে ধীরে ভারতে বাড়বে।'

সিমেন্ট রপ্তানি বাড়ায় সামগ্রিকভাবে বন্দরের আয়ও বাড়ছে। আর চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে সিমেন্ট রপ্তানি আরও বাড়ানোর বিষয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাসিবুল হাসান।

তিনি বলেন, 'ভারতে আমাদের সিমেন্টের চাহিদা আছে। এ চাহিদা কোনো মাসে বাড়ে আবার কোনো মাসে কমে। এটাকে কিভাবে আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি।'

চলতি অর্থবছরে গত জানুয়ারি পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৬৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার পণ্য। একই সময়ে আমদানি হয়েছে মাত্র সোয়া ৬ কোটি টাকার পণ্য। তবে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের সবধরনের সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামরুল পারভেজ।

তিনি বলেন, 'আমদানি ও রপ্তানি যেন দ্রুত হতে পারে সে বিষয়ে কাজ করি আমরা। যেন বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পারি সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকি।'

১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে চলছে ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। ধীরে ধীরে বাণিজ্য বাড়তে থাকায় ২০০৮ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় আখাউড়া স্থলবন্দর।

এসএস