এবারের বৈঠকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব থেকে ১৯০টি দেশের গভর্নর, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা যোগ দিয়েছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে অংশ নেন আগত অতিথিরা।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, উন্নয়ন, নীতিমালা সংস্করণ, সমসাময়িক ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিয়ে প্রতি বছর এ বৈঠকের আয়োজন করে সংস্থাটি।
জানা গেছে, এবারের বৈঠকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিক বিষয়কে। অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, মূলত আন্তর্জাতিক এই বৈঠক অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট হলেও এবার ভূরাজনীতির বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হচ্ছে।
বিশ্বে যে যু্দ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার ফলে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক খাতগুলোর মেরুদণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় থেকে কিভাবে উত্তরণ করা যায়, সেসব বিষয় নিয়ে যেমন আলোচনা হবে, তেমনি একইভাবে আলোচনায় উঠে আসে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও।
এছাড়া জ্বালানি কিভাবে সাশ্রয় করা যায়, বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে চলতি বছরের বৈঠকে। একই সঙ্গে আমদানি রপ্তানি এবং যেসব সমুদ্র পথ রয়েছে, সেখানে যাতে বাণিজ্যিক যোগাযোগ ব্যাহত না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন আলোচকরা।
এবারের সভার মূল আলোচ্য বিষয় রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে টেকসই উন্নয়ন, সবুজ অর্থায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, বিশ্ব পরিবেশের জন্য সুযোগ-সুবিধা ও জাতীয়ভাবে সার্বিক উন্নয়নে কতটুকু অবদান রাখা সম্ভব- এসব বিষয়ে দেওয়া হবে গুরুত্ব।
আইএমএফকে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া ও আগামী দিনে অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি ভালো রাখতে বাংলাদেশের করণীয় কী, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেবে আইএমএফ।
বৈঠকের প্রথম দিনে ‘গ্লোবাল পার্লামেন্টারি ফোরাম’ সভায় বিশ্বব্যাপী সংঘাতের বিষয়টি তুলে ধরেন বক্তারা। তারা বলেন, ‘বিশ্বে সংঘাত ও শান্তি একসাথে চলতে পারে না।’
বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে বিশ্বব্যাংক গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে সহায়তা থাকবে। অন্যান্য অর্থনৈতিক ইন্সটিটিউটকেও এগিয়ে আসতে হবে। সব দেশের বাজেট পরিকল্পনায়, মুদ্রানীতিতে জলবায়ু বিপর্যয় থেকে উত্তরণের বিষয়টি রাখতে হবে।
নগরকে নিরাপদ করার পাশাপাশি তৃণমূলেও শক্তিশালী পরিকল্পনা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা এখন থেকে না রাখলে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি অনিরাপদ হবে। সামষ্টিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থে সেটি করতে হবে।’
এছাড়া বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেগুলো এবারের আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটি নিয়ন্ত্রণে যে মনিটরিং পলিসি রয়েছে, সেখানে কী ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার, সেসব বিষয়েও পরামর্শ দেবেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।