বাজার
অর্থনীতি
0

দুই দিনেও কার্যকর হয়নি সরকারের বেঁধে দেয়া দাম

দুইদিনেও বাজারে কার্যকর হয়নি ২৯টি পণ্যের বেঁধে দেয়া দাম। এ নিয়ে তদারকিও যৎসামান্য বলে অভিযোগে ক্রেতাদের। এমনকি দাম নির্ধারণের বিষয়টিই জানেন না ক্রেতা বিক্রতাদের অনেকে। উল্টো সরবরাহ সংকট আর সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়ছে আলু, ডালসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, সরকারি সংস্থাগুলো প্রচার না চালানোয় বিষয়টি জানাজানি হয়নি।

আলুর সরকারি দাম সাড়ে ২৮ টাকা। তবে চট্টগ্রামের বাজারে অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি বাজারে কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকায়। গত ২ সপ্তাহে আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।

চট্টগ্রামে সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না ছোলা, পেঁয়াজ কিংবা কোন ধরনের ডাল জাতীয় পণ্য। উল্টো সপ্তাহ ব্যবধানে সরবরাহ সংকটে সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। খেসারি ডাল সরকারি দাম ৯২ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ছোলা ৯৮ টাকা, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায় আর মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও ভোক্তাদের গুনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা। তবে সরকারি দাম নির্ধারণের বিষয়ে জানেন না বলছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, 'গত একসপ্তাহে আলুর দাম বাড়তে বাড়তে বর্তমান পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা থেকে ৩৩ টাকা করে। খোলা বাজারে আমরা ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করছি।'

আরেকজন বলেন, 'সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তা এখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারি কোন না কোন লোককে এসেই এখানে বলতে হবে। সরকার যদি এসি রমের মধ্যে বসে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বলে দেয় তাহলে তো জনগণের কোনো লাভ হবে না।'

গরুর মাংসের সরকারি দাম ৬৬৫ টাকা। অথচ চট্টগ্রামের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮৫০-৯৫০ টাকায়। নির্ধারিত দামের তোয়াক্কা করছে না ব্রয়লার আর সোনালি মুরগির ব্যবসায়ীরাও। কেজিতে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে মুরগি বিক্রি করছেন তারা। বিক্রেতাদের সাফ জবাব, এ দামে গরুর মাংস বিক্রি সম্ভব নয়।

মাংস বিক্রেতা বলেন, 'আমরা দুই মণ মাংস আনি। এর মধ্যে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা খরচ আসে না। আমার তিনজন লোক আছে তাদের বেতন দিতে হয়।'

আরেকজন বলেন, 'সরকার তো বলছে ৬৬৫ টাকায় বিক্রি করতে এইটা আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে। আমাদের দোকানদারি বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা তো বেচাকেনা করতে পারবো না। আমাদের ছয় থেকে সাত হাজার টাকার মতো খরচ। এই খরচ কে দিবে?'

দাম নির্ধারণ হলেও সেই সুফল মিলছে না ক্রেতা পর্যায়ে। সরকারের অভিযান, জরিমানা কোন কিছুই বাজারে প্রভাব ফেলছে না। ভোক্তাদের দাবি, সরকার শুধুমাত্র দাম বেঁধে দিলেই বাজার নিয়ন্ত্রণ আসবে না। এজন্য নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ

ক্রেতারা বলেন, 'সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সেই দামে পাওয়া যাচ্ছে না। দাম একটু বেশি।'

খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, 'পাইকারি বাজারে গিয়ে যদি তারা চাপ সৃষ্টি করে তাহলে আমরা যারা খুচরা ব্যবসায়ী আছি তারা কম দামে বিক্রি করতে পারতাম।'

তবে বাজারে এখনও কার্যকর না হলেও ২৯ টি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচক বলছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। তবে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ দাম কোন কাজে আসবে না বলছেন ভোক্তারা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর