ক্যাশলেস সোসাইটি গড়তে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দু'টি ডিজিটাল ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৬ মাস সময়ের ৩ মাস শেষ হয়েছে। বাকি তিন মাসের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করা কি সম্ভব? যদিও ব্যাংক দুটি বলছে, আগামী ৩ মাসের মধ্যে গ্রাহককে ডিজিটাল সেবা দিতে পারবে তারা।
২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য অনুমোদন পায় নগদ ডিজিটাল ব্যাংক ও কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক। এছাড়া নীতিগত অনুমদন পায় আরও ৬ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যাংকের সকল সেবা মিলবে এ ডিজিটাল প্লাটফর্মে। ভার্চুয়াল কার্ড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য চালু করতে পারবে ডিজিটাল ব্যাংকগুলো। তবে কোন প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না তারা। এ ব্যাংকের গ্রাহকরা অবশ্য অন্য ব্যাংকের এটিএম, এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ডিজিটাল ব্যাংকে ঋণপত্র খোলার সুযোগ থাকছে না। ক্ষুদ্র ঋণ দিলেও বড় ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দেওয়া যাবে না। তবে আমানত নিতে কোনো বাধা নেই।
একেকটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য নূন্যতম মূলধন লাগছে ১২৫ কোটি টাকা, যা প্রচলিত ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৫০০ কোটি টাকা। নীতিমালায় বলা হয়, ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে উদ্যোক্তাদের অর্ধেক হতে হবে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, সাইবার আইন বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। বাকি অর্ধেককে হতে হবে ব্যাংকিং, ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং আইন বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।
এদিকে অনুমোদিত দুটি ব্যাংকের কার্যক্রম ৬ মাসের মধ্যে শুরু করার নির্দেশনা আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তবে ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুরু না করা গেলে কি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক?
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘আমাদের ৬ মাসের সময়সীমা দেয়া আছে। ওই সময়ের মধ্যে তারা অবশ্যই তাদের কাজের অগ্রগতি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাবে। আর সেটা দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি: এখন টিভি
প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ভার্চুয়াল ব্যাংক চালু করা সহজ হবে না বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠান দুটি। তবে তারা আশা করছে, বাকি ৩ মাসের মধ্যেই আংশিকভাবে শুরু হবে কার্যক্রম।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশনস জাহিদুল ইসলাম সজল বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি অনেকখানি এগিয়ে গেছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করবো।’
ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা গ্রামীণ ও প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণদের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খলবে। আর সে লক্ষ্যেই প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তরা।
কড়ি ডিজিটাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ নেয়ামুল করিম বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই গ্রাহকদের ডিজিটাল ব্যাংকের সুবিধা দিতে কাজ করছি।’
২০২৪ সাল হবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বছর। যার সব থেকে বড় দিক হবে ক্যাশলেস বাংলাদেশ। আর ক্যাশলেস দেশ গড়তে মূল হাতিয়ার হবে এই ডিজিটাল ব্যাংক।