বছর জুড়েই নোয়াখালী পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণপুরে জলাবদ্ধতা।
বাড়ির বাসিন্দারা বলছেন, পৌরসভার ড্রেনের পানি তাদের বাড়ির উঠোনে জমে থাকে মাসের পর মাস। পচা পানির উৎকট গন্ধে চরম ভোগান্তি।
এলাকাবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘যত বিল্ডিং এর বালি আছে, সব ড্রেনের ওপরে রাখে। যখন বালিগুলো ড্রেনের ভেতরে ঢোকে ড্রেন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।’
আরেকজন বলেন, ‘খুবই গন্ধ এখানে, আমাদের থাকতে খুব কষ্ট হয়। ময়লা-আবর্জনা সব এসে ড্রেনের মুখে আটকে যায়।’
নোয়াখালী পৌর এলাকার বেশিরভাগ স্থানে একই চিত্র। খালগুলোও বেদখলে। ময়লা জমে ড্রেনগুলোতে বছরের পুরো সময়ই পানি চলাচল বন্ধ থাকে। কোথাও কোথাও ড্রেনের উপর মাটি জমে জন্মেছে আগাছা। ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালীবাসীকে বন্যা পরবর্তী জলাবদ্ধতায় ভুগতে হয়েছে তিন মাসের বেশি। এজন্য খাল ও ড্রেনগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকে দুষছেন পৌরবাসী।
পৌরবাসীদের আরেকজন বলেন, ‘নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ গতবার যে পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, সেই একই রকম অবস্থা এখনো আছে। একটু বেশি বৃষ্টিপাত হলেই আগেরবারের তুলনায় এবার আরো বেশি ক্ষতি হবে।’
স্থানীয়দের দাবি, বর্ষা এলে পৌর কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো পরিচ্ছন্নতায় অভিযানে নামে, অথচ বাকিটা সময় এ নিয়ে কোনো কার্যক্রমই চোখে পড়ে না। পৌর এলাকার ড্রেনগুলো পরিষ্কার ও পারস্পরিক সংযোগ স্থাপন জরুরি। নইলে বর্ষায় ফের ভোগান্তি হবার শঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘আশা করছি খুব দ্রুত এই ড্রেনগুলো সংস্কার করে নোয়াখালীর উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।’
নোয়াখালীর জলাবদ্ধতার বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কমিটি করে দেয়া হয়েছে। যার প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘এই জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানে আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, সেই কমিটি কাজ করছে। স্থানীয় সরকারকেও এই সমস্যা সমাধানে আমরা অতি দ্রুত একটা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দিয়েছি।’
১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ১৭ দশমিক ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ক শ্রেণীর নোয়াখালী পৌরসভায় ১৩ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সেকেন্ডারি ড্রেন, ৩২ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার টারসিয়ারি ড্রেন ও ১৭ কিলোমিটার খাল রয়েছে। যার বেশিরভাগেই অবৈধ দখল আর পরিচর্যার অভাবে পানি চলাচল বন্ধ।