বেসামরিক নাগরিক নিহতের পর আলেপ্পোতে পাল্টাপাল্টি হামলা স্থগিত

আলেপ্পোতে পাল্টাপাল্টি হামলা
আলেপ্পোতে পাল্টাপাল্টি হামলা | ছবি: সংগৃহীত
0

আলেপ্পোতে বেসামরিক নাগরিক নিহতের পর উত্তরাঞ্চলীয় শহরটিতে পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে রাজি হয়েছে সিরীয় সেনা ও কুর্দি সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী এসডিএফ। সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধে এরইমধ্যে নির্দেশ জারি করেছেন সিরীয় সেনাবাহিনীর প্রধান। এর আগে আলেপ্পোতে দুই বাহিনীর সংঘাতে প্রাণ যায় দুই বেসামরিক নাগরিকের। শিশু ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যসহ আহত হয় অন্তত ১১ জন। এমন একটা সময় এ হামলা হল যখন প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দামেস্কে অবস্থান করছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান।

রাজধানী দামেস্কে যখন তুরস্কের মন্ত্রী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা, ৩০০ কিলোমিটার দূরে আলেপ্পোতে তখন সংঘাতে জড়িয়েছে সিরীয় সেনাবাহিনী ও কুর্দি সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)।

গেল মার্চে এসডিএফকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করার জন্য কুর্দিদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সিরীয় সরকার। এ সময়সীমা শেষ হওয়া কয়েক দিন আগে সংঘাতে জড়ালো দুইপক্ষ। যদিও এ হামলার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছে তারা।

সোমবার আলেপ্পোর শেইহান ও লাইরমুন গোলচত্বরের কাছে সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালায় এসডিএফ। এতে প্রাণ যায় বেসামরিক নাগরিকের। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সাংবাদমাধ্যম সানার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এসডিএফের গুলিতে শিশুসহ একাধিক উদ্ধারকর্মী আহত হয়।

আহতদের মধ্যে কজন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দুই শিশুকে আহত অবস্থায় দেখলাম। সহকর্মীদের নিয়ে তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে করে ফিরছিলাম। তখন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফের্সের এক স্নাইপার আমাদের দিকে গুলি চালায়। তখন আমার ঘাড়ে আর পাশের সহকর্মীর পিঠেও আঘাত লাগে।’

যদিও বেসামরিক অঞ্চলে হামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসডিএফ জানিয়েছে, এর পেছনে সিরীয় সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য কোনো গোষ্ঠীর হাত আছে। এসডিএফের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দামেস্ক।

আরও পড়ুন:

এমন একটা সময়ে সিরীয় সরকারের বাহিনী ও কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের মধ্যে সংঘাত হলো যখন এ দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে সিরিয়া সফরে গেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান।

প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার সঙ্গে বৈঠকের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন, সিরীয় সরকারের সঙ্গে কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের একীভূত হওয়ার কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত এক বছর সময়ের মধ্যে এসডিএফকে সরকারের অধীনে আনা যাবে না বলেও মনে করেন তিনি।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘সিরীয় সরকারের সঙ্গে এসডিএফের একীভূত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমেই কাজটি করতে হবে যেন দুইপক্ষই লাভবান হয়। এমনটা না হলে, স্থিতিশীলতা, অখণ্ডতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে বাধার মুখে পড়বে সিরিয়া।’

এসডিএফের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ও চুক্তি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ এখন এসডিএফের দখলে। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন এ মিলিশিয়া বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে দেখে আঙ্কারা। সিরীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় না গেলে এসডিএফের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ও সামরিক পদেক্ষপ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে তুরস্ক।

এসএস