মার্কিনদের হত্যার জবাবে প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার জবাবে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বড় ধরণের বিমান হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড, সেন্টকম জানিয়েছে, শুক্রবার মধ্য সিরিয়ায় সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের ৭০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনারা। আর, ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, মার্কিনদের হত্যার জবাবে প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আরও বলেন, সিরিয়ার সরকার এ অভিযানকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।

রানওয়ে ছাড়ছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। রাতের আকাশে এফ-১৫ আর এফ ১০ জেট বিমানের ঝলকানি। অজ্ঞাত একটি বিমান ঘাঁটিতে থেকে এভাবেই সিরিয়ার আইএসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

১৩ ডিসেম্বর সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের হামলায় সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও এক অনুবাদক নিহত হয় বলে দাবি করে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড। ঠিক এর এক সপ্তাহ পর আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করেছে মার্কিন বিমান বাহিনী। এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে অপারেশন ‘হকআই স্ট্রাইক’।

এক্স বার্তায় এ অভিযানের বিষয়ে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি উল্লেখ করেন, সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের অবকাঠামো ও অস্ত্র ভাণ্ডার লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে মার্কিন সেনারা। আরও হুঁশিয়ারি দেন, এটি যুদ্ধের শুরু নয়, বরং প্রতিশোধের ঘোষণা। মার্কিনীদের আক্রমণ করে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় লুকালেও যুক্তরাষ্ট্র তাকে খুঁজে বের করে প্রতিশোধ নেবে।

ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড, সেন্টকম জানিয়েছে, অপারেশন হকআই স্ট্রাইকে ব্যবহার করা হয়েছে যুদ্ধবিমান এফ ১৫ ও এফ ১০, অ্যাপাচি হেলিকপ্টার আর হির্মাস রকেট সিস্টেম। তাদের দাবি, শুক্রবারের ওই হামলা আইএসের লক্ষ্যবস্তুতে শতভাগ আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন বাহিনী। সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার বলেন, মার্কিন নাগরিক ও অংশীদারদের ক্ষতি করতে চাওয়া সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্নভাবে অভিযান চালিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:

শুক্রবারের হামলার পর নর্থ ক্যারোলাইনার একটি সমাবেশ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তার অনুপস্থিতিতে সিরিয়ায় সংঘবদ্ধ হতে শুরু করে আইএস। মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা করায় তাদের শক্ত জবাব দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, মাত্র দু’ঘণ্টা আগে সিরিয়ায় আইএসের সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছি। আমার অনুপস্থিতিতে তারা আবারও একজোট হওয়ার চেষ্টা করছিল। আমরা তাদের ওপর বড় আঘাত হেনেছি। গেল সপ্তাহে আমাদের তিন দেশ প্রেমিক; দুই সৈন্য এবং একজন দোভাষী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের হত্যার বদলা নিতে এ হামলার আদেশ দিয়েছিলাম। এ অভিযান সফল হয়েছে এবং আমরা নিখুঁতভাবে প্রতিটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছি। শক্তির মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনছি।’

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা ওবিএইচআর বিবিসিকে জানায়, সিরিয়ার রাক্কা এবং দেইর এজ জোর শহরের কাছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আইএসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কয়েকজন যোদ্ধা নিহত হয় বলেও উল্লেখ করেছে ওবিএইচআর।

২০১৯ সালে মার্কিন মদদপুষ্ট সিরিয় যোদ্ধারা ঘোষণা দেয়, সিরিয়ায় দখলকৃত শেষ এলাকাটিও হারিয়েছে আইএস। কিন্তু এরপরেও বেশ কয়েকবার বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়েছে সংগঠনটি। আইএসকে চাপে রাখতে সিরিয়ার বিভিন্ন বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে ২০১৫ সাল থেকেই দেশটিতে অবস্থান করছে মার্কিন সেনারা। আইএস দমনের জন্য সম্প্রতি আন্তর্জাতিক একটি জোটে যোগ দিয়েছে সিরিয়া।

এফএস