গেল জুনে ইরানের পরমাণু প্রকল্পে হামলার জেরে ১২দিনের সংঘাতে জড়ায় ইরান ও ইসরাইল। শুরুতে সাফল্য দাবি করলেও পরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল অনুধাবন করে হামলায় তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পাশাপাশি পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার সব সম্ভাবনাই নাকোচ করেছে ইরান। তাই তেহরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় আবারও চড়াও হতে পারে এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছিলো না।
রোববার এই একই আশঙ্কার ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সেখানে বলা হচ্ছে, একসঙ্গে ২ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতা অর্জনের পথে ইরান। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণেও অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে দেশটি। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ইরানের কাছে যে পরিমাণ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম আছে তা দিয়ে ১১টি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। যা এ ইউরেনিয়াম মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছে তেহরান।
আরও পড়ুন:
পরমাণু প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। গেল জুনে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার সময় ইসরাইলের সঙ্গে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্রও। এছাড়া, পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখার নিয়ে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে ইরান। সম্প্রতি যার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
এর জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর আবারও কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ঘোষণা করেছেন, পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না তেহরান। পাশাপাশি তাদের প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না আন্তর্জাতিক কোনো ওয়াচডগ বা পর্যবেক্ষক দল।
আরও জানা যাচ্ছে, নতুন করে আরও একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র তৈরি করেছে ইরান। যার কারণে গালফ উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, এসব কারণে ইরানে ইসরায়েলের আরেকটি সামরিক হামলা এখন প্রায় অনিবার্য।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতে, এই অবশ্যম্ভাবী সংঘাতের জন্য প্রস্তুত ইরানও। গেল জুনে ১২ দিনে ইসরাইলি ভূখণ্ডে ৫শ'র মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল তেহরান। এবার আইডিএফকে কোণঠাসা করার জন্য একসঙ্গে ২ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। বাড়ানো হয়েছে প্রোডাকশন, ঘড়ির কাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি কাজ।
যদিও পশ্চিমা বিশ্লেষকদের দাবি, ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে বিপদে পড়বে ইরানই। দেশটির প্রায় ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ লড়াই করছে দারিদ্রের সঙ্গে। এমন প্রেক্ষাপটে একটি যুদ্ধের কারণে কয়েক যুগ পিছিয়ে যেতে পারে ইরানের সমৃদ্ধি।





