মিরপুরে হোম অফ ক্রিকেটের পাশেই দেশের সাঁতারের প্রধান কেন্দ্র। তবে দুই আন্তর্জাতিক আসরের আগে জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে শুনশান নীরবতা। যে পুলে থাকার কথা ছিল সাঁতারুদের প্রস্তুতি, সেখানে কেবলই শূন্যতা।
জানানো হয়েছিল, জাতীয় সাঁতারের পর ছুটিতে আছেন সাঁতারুরা। তবে মিশরীয় কোচ সাঈদ ম্যাকডির সঙ্গে আলাপে উঠে এলো ভিন্ন তথ্য। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এ কোচ জানালেন, সুইমিংপুলের অস্বাস্থ্যকর পানির কারণেই বাধ্য হয়ে ছুটিতে পাঠিয়েছেন সাঁতারুদের। যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন তিনিও।
বাংলাদেশ সাঁতার কোচ সাঈদ ম্যাকডি বলেন, ‘আপনি এখানে পানির মান দেখতে পাচ্ছেন। আমাদের সাঁতারুদের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাবার মতো স্বাস্থ্যসম্মত নয় এটি। তাই যতদিন পর্যন্ত না ঠিক হচ্ছে আমরা অনুশীলন বন্ধ রেখেছি। আশা করছি তারা শনিবার ফিরে আসবে। মূল সমস্যা পানি পরিষ্কার না। সেসব জিনিস এখানে ব্যবহার করা হয়েছে সেসবের মান আমি যতটা আশা করেছি ততটা ভালো নয়।’
সাঁতারের দুই দেশি কোচও জানালেন পানি নিয়ে সমস্যার কথা। ট্যালেন্ট হান্ট কিংবা জাতীয় সাঁতারের পর পুলের এ অস্বাস্থ্যকর পানির কারণে সাঁতারুরা ভুগছেন নানা শারীরিক জটিলতায়।
বাংলাদেশ সাঁতার কোচ মোহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এইচপি এবং ক্লোরিন পয়েন্টগুলোর লেভেলে থাকতে হবে। কোনো সময় দেখা যাচ্ছে এইচপি হাই হয়ে ক্লোরিন নেই হয়ে যাচ্ছে তখন কানের সমস্যা স্কিনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’
বাংলাদেশ সাঁতার কোচ মাহফুজা খাতুন শিলা বলেন, ‘প্রতিটি অ্যাথলেটেরের কানে সমস্যা হয়েছে। যেটা আমাদের জন্যও ক্ষতিকর তারা তো আমাদের বাচ্চা। আমরা তাদের ট্রেন করছি পাশাপাশি হাতে পায়ে চুলকানিও দেখা দেয়। আমরা এ বিষয়ে ফেডারেশনকে জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন:
এখন টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপে সাইদ ম্যাকডি কথা বলেছেন সাঁতারুদের খাবারের মান নিয়েও। রান্না ঘরে গিয়ে পাওয়া গেল সত্যতা৷ খোলা খাবারের ওপর মাছির আনাগোনা, রান্নাঘরের নোংরা পরিবেশ অ্যাথলেটদের জন্য একপ্রকার হুমকিই বটে
সাঈদ ম্যাকডি আরও বলেন, ‘খাবারের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে যে কঠোর পরিশ্রম করছি তার রিকোভারির জন্য সাঁতারুদের ভালো খাবারের প্রয়োজন। তাই আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি খাবারের পরিমাণ এবং মানসম্মত খাবার বাড়াতে। খাবারের মান ভালো না থাকলে আমাদের কর্মপরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটাবে। আমরা তাই বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা করছি।’
তবে সুইমিং ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিবেদিতা দাস শোনালেন আশার কথা। দ্রুতই পুলে নতুন পানির আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খাবার সংক্রান্ত অভিযোগের জবাবও দিলেন।
বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিবেদিতা দাস বলেন, ‘টেকনিক্যাল পার্সন আছে সে বিষয়টি দেখছেন। পুরাতন যিনি ছিলেন সে ছিলো না। তার পরিবর্তে অন্য একজন দায়িত্বে ছিলো। মূলত সমস্যাটি এখানেই হয়েছে। আশা করি তিন চারদিনের মধ্যে আমাদের পানির সমস্যা কেটে যাবে। আমরা একটি মনিটরিং টিম করেছি সেই টিমে প্রতিদিনই খাবারকে পর্যবেক্ষণ করছি।’
পানিতে গরমের ব্যবস্থা থেকেও অকার্যকর, সুইমিং পুলে অস্বাস্থ্যকর পানি, এতকিছুর পরেও সবশেষ ক্যাম্পে ভেঙেছে ২৩ জাতীয় রেকর্ড। বিদেশি কোচ সাইদ ম্যাকডির দাবি, উন্নতি আসছে সাঁতারুদের। তবে, অস্বাস্থ্যকর পানি আর নিম্নমানের খাবার সাঁতারু আর পদকের মাঝে যে ব্যবধান গড়ে দিচ্ছে, সেটাই এখন দুশ্চিন্তার কারণ।





