অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর; কার্যক্রম বন্ধের হুমকি ইউজার্স ফোরামের

চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর | ছবি: এখন টিভি
0

মাশুল এবং বন্দরে গেট পাস ও যানবাহন প্রবেশ ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম এক প্রকার অচল হয়ে পড়েছে। পরিবহন মালিক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কর্মবিরতিতে গতকাল (শনিবার, ১৮ অক্টোবর) থেকেই বন্ধ রয়েছে সড়কপথে বন্দরের পণ্য পরিবহন ও আমদানি পণ্য ডেলিভারি। কোনো গাড়ি বন্দরে ঢুকতে না পারায় রপ্তানি পণ্যও ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট হচ্ছে সীমিত পরিসরে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করা না হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন পোর্ট ইউজার্স ফোরাম। সংকট নিরসনে বৈঠক ডেকেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পণ্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘটে স্থবির চট্টগ্রাম বন্দর। জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক থাকলেও বন্ধ রয়েছে পণ্য ডেলিভারি ও সারা দেশে পণ্য পরিবহন। ফলে ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা।

মাশুল বাড়ানো এবং গেইট পাস ও পরিবহন প্রবেশের ফি চার গুণ করার প্রতিবাদে রোববার সকাল ৯টা থেকে বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম বন্ধ রাখেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। বন্দরে কোন গাড়ি না ঢোকায় বেকার হয়ে পড়েছেন পণ্য লোডিং, আনলোডিংয়ের কাজে যুক্ত পাঁচ হাজার মার্চেন্ট শ্রমিক।

মার্চেন্ট শ্রমিক গাড়ির চালক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বলেন, ‘অস্থায়ী গেটপাস ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ২৮ দিনের। এখন গেটপাস করছে তিন হাজার ২২০ টাকা। এভাবে ৩২২০ টাকা দিলে আমরা গরিব মানুষ কি চাকরি করতে পারবো?’

চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজারস ফোরামের আহ্বানে ৪২টি বাণিজ্য সংগঠন সমর্থন দিচ্ছে এ ধর্মঘটে। ব্যবসায়ীরা বলছেন বাধ্য হয়েই তারা কর্মসূচি দিয়েছেন। খুব দ্রুত এই সংকটের সমাধান না হলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য।

আরও পড়ুন:

আটলান্টিক গ্রুপের সিইও মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, ‘আমরা চাই না যে অহেতুক একটা কর্মবিরতি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমরা চাই অনতিবিলম্বে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের। আমরা যদি এখানে কার্যক্রম পরিচালিত না করি তাহলে এখান থেকে তো পণ্য বের হবে না। পণ্য বের না হলে সেটা এখানে চার্জ আরও বৃদ্ধি পাবে। ভোক্তা সাধারণ তার ক্ষতির শিকার হবে। ব্যবসায়ীরা আরও বেশির ক্ষতি সাধিত হবে।’

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, ‘ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের, আমদানিকারকদের। ক্ষতিপূরণ ব্যবসায়ীকে দিতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ী কেন স্ট্রাইক করবে? রপ্তানিকারকের আদেশ বাতিল হবে, তাহলে কেন গতকাল তিন হাজার ব্যবসায় মিলে কর্মবিরতির এখানে প্রোগ্রাম দিচ্ছে। নিশ্চই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। হয়তো সরকারের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং ব্যবসাবান্ধব হচ্ছে না।’

এদিকে গেইট পাস ও যানবাহন প্রবেশ ফি বাড়ানো নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের আপত্তি সত্ত্বেও গেল ১৫ অক্টোবর থেকে ৫২টি সেবায় গড়ে ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে মাশুল আদায় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গেইট পাস ও যানবাহন প্রবেশ ফি বাড়ানো হয়েছে প্রায় চার থেকে থেকে ১০ গুণ।

এসএস