ইসমাইল হানিয়া বা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার পর ইসরাইল-ইরানের মধ্যে যে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়েছিল। আট মাস বিরতির পর এরচেয়েও ভয়াবহ পরিণতির দিকে হাঁটছে দুই দেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুক্রবার ভোররাতে তেহরানে ইসরাইলের হামলা ছিল সর্বাত্মক যুদ্ধের উস্কানি। নেতানিয়াহুর এই ‘অ্যাক্ট অব ওয়ার’ ইরানকে আরও বেশি মরিয়া করে তুলবে এমন আশঙ্কাও জানাচ্ছেন তারা।
মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত আরও তীব্র হতে শুরু করায় নড়চড়ে বসেছেন বিশ্বনেতারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরাইলের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন তারা। দুই পক্ষকে সংযত আচরণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে দেয়ায় নেতানিয়াহু প্রশাসনের যুদ্ধনীতির সমালোচনা করেছেন আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ভেনেজুয়েলা, তুরস্ক, মালয়েশিয়ার সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। বিবৃতি এসেছে পাকিস্তান, সৌদি আরব ও কাতারের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকেও।
আরো পড়ুন:
তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে গণমাধ্যম শিরোনামে উঠে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার রয়টার্সকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, তেহরানের হামলার বিষয়ে আগে থেকেই জানতো ওয়াশিংটন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সবকিছুই আগে থেকে জানতাম। ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে চেয়েছিলাম। ইরানকে বাঁচাতে চেয়েছি কারণ পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমি এখনও আগ্রহী।’
এর আগে বহুবার ইসরাইলকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ষষ্ঠ দফায় পরমাণু বৈঠক নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঠিক কী কারণে ইরানে হামলা করা থেকে ইসরাইলকে বিরত রাখতে পারলেন না ট্রাম্প? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে ইরান-ইসরাইল সংঘাতের কারণে ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে জাতিসংঘের কনফারেন্স বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন অন্যতম আয়োজক দেশ ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
এখনও পর্যন্ত নিজ ভূখণ্ড থেকে একে অপরের আকাশসীমায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল ও ইরান। বিশ্লেষকরা মনে করেন, অস্তিত্ব জানান দেয়ার এই পাল্টাপাল্টি হামলা থামানো না গেলে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দামামা বাজতে আর দেরি নেই।





