যাদের পাঁজর-ভাঙা শ্রমের বিনিময়ে হোম অব ক্রিকেট ধরে রাখে নিজের সজীবতা। মহান মে দিবসে কেমন আছেন তারা?
দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী বেশিরভাগ মানুষের কাছেই হয়তো মে দিবস আর দশটা দিনের মতোই অতি সাধারণ। মিরপুর শেরে বাংলায় এদিন যার প্রমাণ মিলেছে হাতেনাতে। আকাশে কালো মেঘ যখন প্রকৃতির রূপ সাজাতে ব্যস্ত, তখন এই স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ডসম্যানরা ব্যস্ত মাঠকে খেলার উপযোগী করতে।
কেউ পাইপ হাতে পানি ঢালছেন উইকেটে, তো কেউ উইকেটে ঘাস ছিটিয়ে রোল করছেন। মেহনতি মানুষদের বিশেষ দিনেও ব্যস্ততা ছাড় দেয়নি স্টেডিয়ামের ৩২ জন গ্রাউন্ডস ম্যানকে।
ক্যামেরার আড়ালে দুই একজন মুখ খুললেও বোবা কান্না চলে বেশিরভাগ মাঠকর্মীর মনে। অবসর কিংবা আনন্দ এসব তো তাদের কাছে বিলাসিতা। দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম মাঠের উইকেটের সৌন্দর্য ধরে রাখাই প্রধান লক্ষ্য।
মাঠকর্মীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পরশু দিন খেলা আছে তো। তার জন্য পিচ বানাতে হবে। যদি ছুটি দিয়ে দেয় তাহলে তো খেলোয়াড়রা এসে বসে থাকবে। তারা বোর্ডের কাছে বিচার দেবে যে পিচ বানালেন না কেন? সমস্যা কী ছিল? আমরা যদি দায়িত্ব নিয়ে কাজ না করি তখন আইসিসির কাছে দুর্নাম হবে যে গ্রাউন্ডসম্যানরা কাজ করে না। খেলোয়াড়রা এসে বসে আছে, পিচ বানানো হয়নি। তখন আমাদের সমস্যা।’
কাজের পারিশ্রমিকটাও যে খুব বেশি এমন না। কেউ পান ১৮ হাজার তো কারো পারিশ্রমিক ১৫ ছুঁই ছুঁই। সেটাও আবার বেড়েছে নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদের কল্যাণে। পরিবার নিয়ে তিন বেলা খেতে পারলেই যেন জীবনটা সুন্দর মনে হয় এসব মেহনতি মানুষের কাছে।
নানা বাঁধা পেরিয়ে, না বলা কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে তারা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন দেশের ক্রিকেট। সংসারের ঘানি টানা এসব মাঠকর্মীর জানা নেই দম ফেলার ফুরসত। তবে নিজের প্রাপ্তির খাতায় প্রাপ্য সম্মানের হিসেবটা যেন মেলাতে পারেন, দিনশেষে এমনটাই চাওয়া তাদের।




