উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ক্ষমতা গ্রহণের দিনই ২০০ এর বেশি নির্বাহী আদেশে সই করবেন ট্রাম্প!

অপেক্ষা শুধু মার্কিন ভূখণ্ডে সোমবারের (২০ জানুয়ারি) সূর্য ওঠার। একটি একটি করে সংকট নির্মূল করবেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন গতি আর শক্তিতে কাজ করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যা এর আগে কখনও ঘটেনি। দায়িত্ব নেয়ার পর মুহূর্তেই বইয়ে দেবেন নির্বাহী আদেশের ঝড়। হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের একদিন আগে বিজয় সমাবেশে এভাবেই শ্রোতাদের আশ্বস্ত করলেন ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ২০০ এর বেশি নির্বাহী আদেশে সই করবেন তিনি।

রাজনীতিতে শূন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রথমবার ভোটের মাঠে পা রেখেই বিশ্বের সবচেয়ে প্রতাপশালী দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছিলেন যে শ্লোগানে ভর করে, সেই ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ই ছিল ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন পূর্ব বিজয় সমাবেশের শিরোনাম। মাঝে একটি মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে থাকলেও লক্ষ্য থেকে যে বিচ্যুত হননি ডোনাল্ড ট্রাম্প, বরং ফিরেছেন আরও দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে, প্রমাণ করলেন সেটাই।

ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিজয় সমাবেশের দরজা খোলার কথা ছিল রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায়। কিন্তু তাকে একনজর দেখতে, তার কথা শুনতে অপেক্ষমাণ জনতা সারি বাঁধতে শুরু করে ভোর থেকেই। তীব্র শীত উপেক্ষা করে হাসিমুখে অপেক্ষারত ট্রাম্প সমর্থকরা জানান নিজেদের প্রত্যাশার কথা।

স্থানীয় একজন ট্রাম্প সমর্থক বলেন, 'ভোর ৫টায় এখানে এসেছি। আগামী দিনও একই কাজ করবো। আরও আগেই বের হতাম কিন্তু হিমশীতল ঠাণ্ডায় তা সম্ভব হয়নি।'

মাত্র চার বছরের ব্যবধানে জনতার রায় উল্টে দিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে হোয়াইট হাউজে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষণগণনা শেষ হবে সোমবার সকালেই যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার মধ্য দিয়ে।

তীব্র শীত ও তুষারপাতের পূর্বাভাস থাকায় ৪০ বছরে প্রথমবার ইউএস ক্যাপিটল ভবনের আইকনিক ওয়েস্ট ফ্রন্ট থেকে অনুষ্ঠানস্থল সরিয়ে নেয়া হয়েছে ক্যাপিটল রোটুন্ডার ভেতরে। ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনা থেকে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ সরাসরি দেখতে এরই মধ্যে টিকেট কেটেছেন সোয়া দুই লাখের বেশি ট্রাম্প সমর্থক।

সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে আসা অনেকেই এক হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ করে থাকছেন হোটেলে, জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচেও থাকছেন অনেকে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৫ হাজার সদস্য।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘ক্যাপিটালের ভিড়ে দাঁড়িয়ে শপথ অনুষ্ঠান দেখবো বলে আশা করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত তা পারছি না বলে খুব হতাশ লাগছে।’

অন্য একজন স্থানীয় একজন বলেন, ‘শপথ অনুষ্ঠানের টিকেট কেটেছিলাম। কিন্তু এখানে পা রাখতে না রাখতেই দেখি টিকেট বাতিল হয়ে গেছে।’

হবু প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হোক বা না হোক, ভক্ত-সমর্থকদের ট্রাম্প জানান, অপেক্ষা শুধু মার্কিন ভূখণ্ডে সোমবারের সূর্যোদয়ের। উচ্ছ্বসিত জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন, দায়িত্ব নিয়েই একটি একটি করে সংকট নির্মূল করবেন; এমন গতি আর শক্তিতে কাজ করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যা এর আগে কখনো ঘটেনি। শপথ নেয়ার পর মুহূর্তেই বইয়ে দেবেন নির্বাহী আদেশের ঝড়। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ২শ'র বেশি নির্বাহী আদেশে সই করবেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আগামীকাল থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক শক্তি ও গতিতে কাজ শুরু করবো আমি। আমাদের দেশ যা যা সমস্যার সম্মুখীন, প্রতিটির গুণে গুণে সমাধান করবো। করতেই হবে। মার্কিন জনতা আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে, প্রথম দিন থেকেই তা ফিরিয়ে দেবো আমরা। সবচেয়ে ধামাকাদার সপ্তাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রেসিডেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্দান্ত ১০০ দিন উপহার দেবো আমি।’

ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনায় রাজনৈতিক এ জনসমাবেশকে সুরের মূর্ছনায় রাঙিয়ে তোলেন তারকারা, জোরদার সমর্থন জানান ট্রাম্পের প্রতি। ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা ইলন মাস্কও।

শপথ গ্রহণ সামনে রেখে এদিন যুদ্ধে শহীদ মার্কিন সেনাদের প্রতি আর্লিংটন ন্যাশনাল সিমেট্রিতে শ্রদ্ধা জানান ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান নেতা।

এসএস