যুদ্ধ
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

প্রতিরক্ষা খাতে পুতিনের রেকর্ড অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনা

যুদ্ধের ময়দানে এগিয়ে থাকতে আগামী বছর প্রতিরক্ষা খাতে রেকর্ড অর্থ বরাদ্দ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও সামরিক খাতে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতির ভীতগুলোতে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলে সামরিক সহায়তা নিয়ে শঙ্কায় পড়ে গেছে ইউক্রেন। রাশিয়া কুরস্কের অনেকখানি পুনর্দখলের পাশাপাশি অন্যান্য এলাকা দখলের দাবি করায় ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সংশয় দূর করতে বলছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনে রাশিয়ার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সেনা অনুপ্রবেশ, এর জেরে রুশ ভূখণ্ডে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কিয়েভের হামলা আর জবাবে ইউক্রেনে নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, সব মিলিয়ে নতুন করে উত্তপ্ত রাশিয়া-ইউক্রেন অস্থিরতা।

পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তার পরও যুদ্ধক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে ইউক্রেন। কয়েক মাস ধরে কুরস্ক এলাকা ইউক্রেনের দখলে থাকলেও ধীরে ধীরে তা হাতছাড়া হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে ইউক্রেনের ড্রোন ভূপাতিত করে নতুন আরও এলাকা দখলের দাবি করছে রুশ সামরিক বাহিনী।

সমরাস্ত্র সক্ষমতায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে রাশিয়া। এমন অবস্থায় ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছরের জন্য দেশের প্রতিরক্ষা খাতে রেকর্ড ভাঙা বাজেট বাড়াচ্ছেন তিনি। ২০২৫ সালে প্রতিরক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলারের বেশি। যা দেশটির মোট বাজেটের ৩২ শতাংশ। গেলো বছরের তুলনায় প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ছে ২৮ শতাংশ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউক্রেন রাশিয়ার সেনা অভিযান এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সংঘাত। দুই পক্ষই জেতার চেষ্টা করলেও সংঘাত দিনদিন বাড়তে থাকায় বাড়ছে দুই পক্ষের আর্থিক ক্ষতি। বাইডেনের আমলে নিরবচ্ছিন্ন সামরিক সহায়তা পেলেও ট্রাম্পের আমলের সহায়তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে কিয়েভ। অন্যদিকে রাশিয়া অস্ত্র আর সেনা সক্ষমতা বাড়ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

যদিও সামরিক খাতে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রভাবে দেশটিতে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছে মূল্যস্ফীতি। সাধারণ মানুষকে জোর করে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়াতে অন্য খাতে তৈরি হচ্ছে শ্রমিক সংকট। সংকট নিয়ন্ত্রণে সুদের হার কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বাড়িয়েছে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রা রুবলের সর্বোচ্চ অবমূল্যায়ন হয়েছে। বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ায় দেশ ছেড়েছেন হাজার হাজার রুশ নাগরিক।

এর মধ্যে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আরও বাড়ছে আগ্রাসন। দুই সপ্তাহ আগে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উচিত ইউক্রেনকে পরমাণু অস্ত্র দেয়া। যেমনটা সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের আগে ছিল। যদিও হোয়াইট হাউজ বলছে, এই ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।

এমন অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধে ট্রাম্পের ভূমিকা স্পষ্ট না থাকায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এখনও সময় আছে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে ইউরোপের সংশয় দূর করার। পাশাপাশি বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালীন ন্যাটোতে যুক্ত হওয়া নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত চাইছেন তিনি।

ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'এখানে কোনো ভ্রম নেই। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেয়া নিয়ে সংশয়ে যুক্তরাষ্ট্র আছে, বাইডেন ন্যাটোতে যোগদানের প্রস্তাব দেবেন কি না জানি না। কিন্তু এই সরকারের হাতে এখনও সময় আছে। ইউরোপের সংশয়ও চাইলে যুক্তরাষ্ট্র দূর করতে পারবে। আমি তো কোনো ঝুঁকি দেখছি না।'

অন্যদিকে ইউক্রেনের সদস্যপদ ঝুলিয়ে রেখে বছর বছর সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ইউরোপীয়ান কাউন্সিল। যদিও নিয়মনীতি বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড ন্যাটোতে যোগদানের অআবেদনই করতে পারবে না।

এসএস