ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল। কোথাও ঝড়, কোথাও বন্যা, আবার কোনো প্রান্তে দেখা গিয়েছে তীব্র তুষারপাত।
ঘূর্ণিঝড় বার্টের আঘাতে ব্রিটেনের যতটা ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়েও বেশি বিপর্যয় দেখা গেছে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে। ভারি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যার কবলে ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ড। ব্রিটেনের দুই শতাধিক স্থানে জারি করা হয়েছে বন্যা সতর্কতা। উপকূলীয় এলাকায় প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি রেকর্ড করা হয়েছে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি।
দেশের প্রায় পুরো অঞ্চলই রয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্টের আওতায়। পাশাপাশি রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ইংল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চল ও ওয়েলসের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে। ওয়েলসের টাফ নদীর পানি পৌঁছেছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ উচ্চতায়। নজিরবিহীন এই বন্যায় বাধ্য হয়ে বাড়ি ছাড়ছেন অনেকে।
স্থানীয় একজন বলেন, 'নিচতলার সব মূল্যবান তৈজসপত্র ওপরতলায় রেখেছি। পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত হেয়ারফোর্ড চলে যাচ্ছি। খুবই খারাপ লাগছে।'
ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া একজন বলেন, 'এখন নদীতে পানির স্তর কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তাই লোকালয় থেকে পাম্প করে পানি ফেলা হচ্ছে নদীতে।'
ইউরোপের মতো একই পরিস্থিতি দেখা মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায়। এরইমধ্যেই ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। দুই ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া গেছে বন্যার পানিতে আটকে যাওয়া মোটরগাড়ির ভেতরে। তাই বন্যায় তলিয়ে যাওয়া সড়কে গাড়ি না চালাতে ক্যালিফোর্নিয়াবাসীকে সতর্ক করেছে ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস।
স্থানীয় একজন বলেন, 'যখন আমি বাইরে আসি, তখন বাইরে তেমন পানি ছিল না। তবে সড়কে নামার পরেই বুঝতে পারি গাড়ি তিন থেকে চার ফুট নিচে চলে যাচ্ছে।'
অন্য একজন বাসিন্দা বলেন, 'যতটুকু সম্ভব, বন্যার্ত মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। প্রতিদিনই এই কাজ করছি। আশা করি পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবো।'
ভারি বৃষ্টিতে বন্যা দেখা গেছে বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজে। পাশাজাহুরিয়া নদীর পানি উপচে পড়ছে শহরে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাত থেকে এই আকস্মিক বন্যায় আহত প্রায় অর্ধশত মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত ৪০টির বেশি স্থাপনা। বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য কাজ করছে তিন শতাধিক সামরিক সদস্য। বন্যার্তদের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করার ঘোষণা প্রেসিডেন্ট লুইস আরকির।
এদিকে চলতি মাসে নজিরবিহীন বন্যা পরবর্তী সময়ে ভ্যালেন্সিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় সরকার। এমন অভিযোগে আন্দোলন করেছেন পাঁচ হাজারের বেশি স্প্যানিশ। ৩০টি স্কুল এখনও খোলা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেছে আঞ্চলিক শিক্ষকদের সংগঠন স্টেপভি।