মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

১৫ মাস পর যুদ্ধবিরতির খবরে উল্লসিত বিশ্ববাসী

দীর্ঘ ১৫ মাস পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় বিশ্ববাসীর মনে এসেছে স্বস্তি। চুক্তি কার্যকরের ক্ষণগণনা করছেন ফিলিস্তিনিরা। অপরদিকে জিম্মিদের মুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছেন ইসরাইলিরা। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রধান সড়কে উল্লাস করেছে সাধারণ জনতা। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ছিল মিষ্টি বিতরণ ও আতশবাজির উৎসব।

আগামী ১৯ জানুয়ারি বহুল প্রতীক্ষিত গাজা যুদ্ধ বিরতিতে অনুমোদন দেবে হামাস ও ইসরাইল। এই দিনের জন্য ১৫ মাস ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছে গাজাবাসী।

এক গাজাবাসী বলেন, ‘যুদ্ধের ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কীভাবে এ থেকে উতরে উঠবো জানি না। তবে যুদ্ধ বন্ধ প্রয়োজন।’

গাজার এক কিশোর বলেন, ‘আশা করছি রোববার আমার বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাবো। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এতদিন বাবার অনুপস্থিতি অনুভব করেছি।’

একদিকে যেমন যুদ্ধ বন্ধের অপেক্ষা, ঠিক তেমনি জিম্মিদের বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষা। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তেল আবিবের অধিকাংশ সড়ক দখল করে রাখেন সাধারণ ইসরাইলিরা। এসময় মন্ত্রিসভাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিতে আহ্বান জানানো হয়। হামাসের হাতে জিম্মিদের নিহত হবার ঘটনায় নেতানিয়াহু সরকারকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভকারী এক ইসরাইলি বলেন, ‘আমরা ক্লান্ত। অনেক কষ্টে এতগুলো দিন পার করেছি। সত্যি বলতে ভেঙে পড়েছি। আশা করছি তারা দ্রুতই চুক্তি সই করবে।’

আরেক ইসরাইলি বলেন, ‘চুক্তি কার্যকর দীর্ঘায়িত করার কোনো মানে নেই। আশা করছি দুই সপ্তাহের মধ্যে সবাই বাড়ি ফিরবে। আমরা সবাইকে দ্রুতই সুস্থ ফিরতে দেখতে চাই।’

যুদ্ধবিরতির খবর প্রকাশের সঙ্গে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমা দেশগুলোয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারের আনন্দ মিছিলে যোগ দেন কয়েকশ মানুষ। এসময় ১৫ মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনের সমালোচনা করেন স্থানীয় খ্রিষ্টান এমনকি ইহুদিরাও।

নিউইয়র্কে এক নাগরিক বলেন, ‘খুবই সুন্দর মুহূর্ত। ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি বিজয়ের সমান। সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে গাজাবাসীর জন্য।’

এক ইহুদি নাগরিক বলেন, ‘এই গণহত্যা সত্যিই অকল্পনীয়। পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো গণহত্যার দলিল টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নথিভুক্ত রইলো।’

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতির ঘোষণায় স্লোগানে প্রকম্পিত হয় লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ার। গায়ে ফিলিস্তিনের পতাকা জড়ানোর পাশাপাশি অধিকাংশ মানুষ পরিধান করেন কিফায়া। এসময় গণহত্যায় জড়িত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সহ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।

যুক্তরাজ্যের এক ইহুদি নাগরিক বলেন, ‘এখানে আসার একটাই কারণ প্রকৃত ইহুদিদের প্রতিনিধিত্ব করা। আমরা জায়নবাদ ও ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে।’

আরেকজন নাগরিক বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতির এই সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলাম। স্বস্তি বোধ করার পাশাপাশি আমরা আনন্দিত।’

উৎসবের জোয়ার ছিল মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে। তেহরানের রাস্তায় মিষ্টি বিতরণ করেন ইরানিরা। রাতের আকাশে পোড়ানো হয় আতশবাজি। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে মিছিল করেন কয়েক হাজার মানুষ। উৎসব ছিল কাতার, তুরস্ক, লিবিয়া ও লেবাননসহ বেশ কয়েকটি দেশে।

এএম