আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাইডেন-ইউনূস বৈঠক, গুরুত্ব পেতে পারে জিএসপি ইস্যু

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বৈঠক হতে যাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী চিত্র সাংবাদিক শহিদুল আলম বলেন, এই বৈঠকে বাংলাদেশের সাথে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয় বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, জিএসপির বিষয়টিও এই বেঠকে গুরুত্ব পাবে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে এবার আলোচনার বিষয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সরকারে আসা ইউনূস সম্মেলনে কীভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করবেন সেটি নিয়েও চলছে আলোচনা, জল্পনা ও কল্পনা।

এসব আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জো বাইডেন আর ড. ইউনূসের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। তার সফরসঙ্গী আলোকচিত্রী সাংবাদিক শহিদুল আলম বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে তা ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের। কীভাবে সেখান থেকে বের হয়ে দু'দেশেরই স্বার্থ রক্ষা করে আগের চেয়ে আরও ভালো সম্পর্ক করা যায় তা নিয়ে জো বাইডেনের সাথে কথা হতে পারে।

শহিদুল আলম বলেন, 'ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভারত যে সম্পর্ক আমাদের সাথে এতদিন ধরে রেখেছে তা কোনো ভালো সম্পর্ক ছিল না। এটা একেবারেই সত্য। আমরা আশা করি এটা থেকে ভিন্ন সম্পর্ক হবে। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো আলাপ হবে কী না তা আমরা জানি না। কিন্তু আমাদের অনেক কিছুই পাওয়ার আছে। অনেক রকম দাবি আছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশের সাথে ভারতের একটা দ্বিপাক্ষিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকবে।'

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টিসহ ১৬ বছরের দুঃশাসনের বিষয় নিয়েও জো বাইডেনের সাথে আলোচনা হতে পারে বলে জানান এই আলোকচিত্রী।

শহিদুল আলম বলেন, 'এই অভ্যুত্থানের পর আমাদের সরকার কতটা শক্তিশালীভাবে দেশকে চালাতে পারে সেটা সকলে দেখছে, আমরাও দেখছি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটা শক্তিশালী দেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক কী থাকবে তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার। যারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তারা নিশ্চয়ই এটা নিয়ে ভাবছেন। তবে আমি নিজে যে জিনিসটা মনে করি, তা হলো আমাদের গার্মেন্টসের বড় ক্রেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের নিশ্চই নিজের দেশের কারণে সম্পর্কটা কী থাকবে সেটা ভাবা দরকার।'

আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার বিষয়টিসহ উন্নত দেশের সাথে বাণিজ্য সুবিধা পেতে করণীয় নিয়ে বাইডেন-ইউনূস বৈঠকে আলোচনায় গুরুত্ব পাওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, 'প্রায় ৬০২ শতাংশ গার্মেন্টসের মালিক নাকি ভারত। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনুরোধ করবো, তিনি যেন সেটা খতিয়ে দেখেন। কারণ আমরা যদি জিএসপি সুবিধা পাই, তাহলে কিন্তু বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকদের সুবিধা হোক, আমাদের লোকজন যারা কাজ করছে তাদের সুবিধা হোক। পয়সাটা আমাদের দেশে থাকুক। এই খাত থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার ভারতীয়রা চুরি করে নিয়ে যায়। আমাদের এটা বন্ধ করতেই হবে। জিএসপি সুবিধা যেন আমাদের মানুষ পায় সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।'

জাতিসংঘ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইতিবাচক ও সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে বলে মনে করেন তারা।

এসএস