কক্সবাজারে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি, বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা

কক্সবাজারে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি, বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা
কক্সবাজারে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি, বাড়ছে জলাবদ্ধতা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা |
0

কক্সবাজার সদর উপজেলা ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আলাদা পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই পরিবারের ৬ জন নিহত হয়েছে। ভারী বর্ষণে রাত থেকে বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এছাড়া পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে আরও এক শিশুর। এদিকে কক্সবাজারে অব্যাহত রয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত। এতে নিম্নাঞ্চলে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভারি বৃষ্টির কবলে কক্সবাজার। এতে শহরের অভ্যন্তরে বেশ কিছু পাহাড়ে দেখা দিয়েছে ফাটল। ঘটেছে পাহাড় ধসের ঘটনাও।

ভারি বৃষ্টিতে রাত দুইটার দিকে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় এলাকায় মিজানের বাড়িতে পাহাড়ের একটি অংশ ধসে পড়ার বিকট শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। এসময় চাপা পড়ে মিজান, তার স্ত্রী আখি আক্তার ও তার ৭ বছরের কন্যা সন্তান ময়না আকতার ও ২ বছর বয়েসি মায়া আকতার। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করলেও ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় বাকি তিনজনের।

এক অধিবাসী জানান, সরকারিভাবে থাকার কোনো ব্যবস্থা না পাওয়ায় তারা নিজেদের বাড়িতেই ছিল।

এদিকে, উখিয়ার হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে ঘটে আরেক পাহাড় ধসের ঘটনা। এসময় ঘরের নিচে চাপা পড়ে ৩০ বছর বয়েসি আব্দুর রহিম, ১০ বছরের আব্দুল হাফেজ ও ৮ বছরের আব্দুল ওয়াছেদ। পরে উদ্ধার করা হয় তাদের ও মরদেহ।

পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে মাইকিং চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এরইমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে উখিয়া উপজেলায় সাড়ে তিনশর বেশি পরিবারকে। এছাড়া পাহাড় ধসে নিহত পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে।

ফোনকলে কক্সবাজার প্রশাসক বলেন, ‘গতকাল থেকে সদরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলায় মাইকিং চলছে। আমাদের উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে মাইকিং চলছে।’

এদিকে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে কক্সবাজার জেলাজুড়ে। যাতে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলের প্রধান সড়ক ও ঘরবাড়ি। এতে নিম্নাঞ্চলে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দি কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

কক্সবাজারে ঘুরতে আসা এক পর্যটক বলেন, আমরা খুবই হতাশ। আমাদের দেশের সবথেকে বড় পর্যটন কেন্দ্র এটি। কিন্তু এখানে এসে হোটেল থেকে চলাচলের পথ পানির নীচে। নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

টেকনাফে বাড়ির উঠানে জলাবদ্ধতায় পানিতে ডুবে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এএইচ