বন্যার পানিতে ডুবেছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হঠাৎ বন্যায় জনজীবন যেমন বিপর্যস্ত; তেমনি এলোমেলো হয়ে গেছে শিক্ষা কার্যক্রম।
হালুয়াঘাটের নড়াইল ইউনিয়নের কাওয়ালীজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেক পানির নিচে। পাশের নির্মাণাধীন ভবনের দোতলায় আশ্রয় নিয়েছেন বানভাসি মানুষ। বিদ্যালয়ের আশপাশের মাইলের পর মাইল শুধু পানি আর পানি।
এই বিদ্যালয়ের মতো হালুয়াঘাটের ১৬৫টি, ধোবাউড়ার ৯০টি আর ফুলপুরের ১৩টি বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে বন্যায়। এরমধ্যে ৮০টি বিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। দুই উপজেলায় বন্ধ রয়েছে ৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো। পাঠদান বন্ধ থাকায় ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সামনেই বার্ষিক পরীক্ষা, এনিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই অভিভাবকদের।
এদিকে বারবার স্কুল বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে বলে মত শিক্ষকদের। এর প্রভাব পড়তে পারে বার্ষিক পরীক্ষায়। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তারা।
এছাড়া আকস্মিক বন্যায় ডুবে গেছে শেরপুরের ঝিনাইগাতি, নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর পানি ওঠেনি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বন্যার কারণে অনির্দিষ্টকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
এদিকে নেত্রকোনায় বানের পানিতে ডুবেছে দুইশ'র বেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গেল তিন দিনের বন্যায় জেলায় প্রায় ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে বইসহ শিক্ষা সামগ্রী।
যাদের বই-খাতা বন্যার পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে তাদের বই-খাতাসহ শিক্ষা উপকরণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। আর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করে করে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে, পানি নেমে গেলে দ্রুত স্কুলগুলো চালুর পাশাপাশি বইপত্র বা অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা। বন্যাকবলিত এলাকার দু'দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় দ্রুত পানি কমছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা ।