বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ধরাশায়ী বাংলাদেশ। শুধু হারই না, এ ম্যাচের পর লজ্জাজনক এক পরিসংখ্যানের সামনে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
ক্রিকেটে একেবারেই তরুণ যুক্তরাষ্ট্র। মূলত অভিবাসীনির্ভর এ দলটি আইসিসির সহযোগী দেশের একটি। বাংলাদেশ সেখানে পূর্ণ সদস্য। তাদের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগে সিরিজ হার মনে করিয়ে দেয় অতীতের অনেক ঘটনা।
সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে হারানো পঞ্চম দল যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, হংকং ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে টাইগার বাহিনীর।
২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড প্রথমবার হারায় বাংলাদেশকে, এখন তারা আইসিসির পূর্ণ সদস্য। আর স্কটিশদের বিপক্ষে দুবার খেলেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হারের পর আরও এক লজ্জার রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি হারের রেকর্ড এখন শুধু বাংলাদেশের। তারপরের অবস্থানে থাকা ক্যারিবিয়ানরা। যদিও তাদের ম্যাচ সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।
অন্যদিকে ১০০ ম্যাচ খেলা দলের হারের পরিসংখ্যানেও বাংলাদেশর অবস্থান দুই নম্বরে। সামনে কেবল জিম্বাবুয়ে। টাইগারদের টি-টোয়েন্টি অধ্যায়ে ১৬৮ ম্যাচ খেলার মধ্যে ৩৩টিই খেলেছে বিশ্বকাপে। তার মধ্যে জয় মাত্র ৭ ম্যাচে।
দেড় যুগ আগে যখন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি যাত্রা শুরু হয়, তখনকার চেয়ে এখন সুযোগ-সুবিধায় অনেকটাই এগিয়েছে দেশের ক্রিকেট। এমনকি শুরুর সময়ে যেখানে ম্যাচ ফি ছিল মাত্র ২৫ হাজার টাকা। তা বেড়ে এখন হয়েছে ২ লাখ টাকা। কিন্তু পারফরম্যান্সের মান কি বাড়ছে?
ক্রীড়াবিশ্লেষক সালেক সুফী বলেন, 'পারফরম্যান্স ক্রমাগত নিচের দিকে যাচ্ছে। যে ম্যাচগুলো হারবে তার জন্য তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নেয়া উচিত। টুর্নামেন্টের একটা টার্গেট ঠিক করে দেয়া দরকার।'
দল হারা কিংবা জেতা যাই হোক ম্যাচ ফির পুরো টাকা যায় ক্রিকেটারদের অ্যাকাউন্টে। তাই একাদশে খেলা সবাইকেই ১ ম্যাচে ২২ লাখ টাকা দেয় বিসিবি। এছাড়া আবাসন, খাবার, যাতায়াত মিলে ক্রিকেটারদের পেছনে প্রতিদিনই ব্যয় হয় লাখ লাখ টাকা।
তাহলে ১৮ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্রিকেট বোর্ডের এতো এতো বিনিয়োগের ফলাফল কী পেলো দেশের ক্রিকেট?
সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক শামীম চৌধুরী বলেন, 'বাংলাদেশের তিনজন ক্রিকেটার বছরে কোটির ওপরে টাকা পায়। পারফরম্যান্স বোনাস রাখা উচিত, তাহলে অনেকেই এর দিকে তাকিয়ে নিজের স্কিল দেখাতে পারে।'
বিশ্লেষকরা বলছেন, ম্যাচ জিতলে যেরকম বোনাসের ব্যবস্থা করে বিসিবি। তেমনি ম্যাচভেদে হারের জন্য থাকা দরকার জরিমানার ব্যবস্থা। এছাড়া জবাবদিহিতার পরিবেশ তৈরিরও জোর তাগিদ বিশ্লেষকদের।