হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের কৃষক বেনু মিয়া। এবার ধান পেয়েছেন ৫শ' মণের বেশি। কিন্তু খোরাকের জন্য মাত্র ৫০ মণ রেখে বাকি ধান মাঠ থেকেই বিক্রি করেছেন তিনি।
কৃষক বেনু মিয়া বলেন, 'ধান বিক্রি করে দিয়েছি মাঠ থেকেই। ইরি ভালো হয়েছে শুধু ২৯ ধান একটু খারাপ হয়েছে।'
বেনু মিয়ার মতো অবস্থা হাওরের অধিকাংশ কৃষকের। বোরো মৌসুমের শুরু থেকে ধান কাটা পর্যন্ত যে টাকা খরচ হয় পুরোটাই আনতে হয় ঋণ করে। ধান কেটে প্রথমেই শোধ করতে হয় ঋণের টাকা। যে কারণে বছরের খোরাক রেখে বাকি ধান মাঠ থেকে বিক্রি করে দিতে হয় কৃষকদের।
আরেকজন কৃষক বলেন, 'টাকার অভাব ও ঋণ পরিশোধ করার জন্য ক্ষেত থেকেই ধান বিক্রি করে দিতে হয় আমাদের।'
এরইমধ্যে জেলায় উৎপাদিত ধানের চার-তৃতীয়াংশ চলে গেছে পাইকার ও ফরিয়াদের হাতে। আর তাদের মাধ্যমে এসব ধান চলে যায় জেলার বাইরে। প্রতিদিন সড়ক পথে ২ হাজার টন ধান যাচ্ছে উত্তরের জেলা দিনাজপুর, নওগাঁ এবং বগুড়ায়। আর আজমিরীগঞ্জে তিনটি নৌ-ঘাট থেকে প্রতিদিন সারে ৫শ' টন ধান যায় আশুগঞ্জ মোকামে। যার বাজার মূল্যে আড়াইশ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, জেলায় উন্নতমানের চালকল না থাকা এবং উত্তরাঞ্চলে মোটা ধানের চাষ কম হওয়ায় হবিগঞ্জের ধানের বড় বাজার তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গে। এছাড়া হবিগঞ্জে ধান রাখার মতো বড় কোন গোদাম না থাকাও এর বড় কারণ বলছেন ব্যবসায়ীরা।
ধান-চাল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান বলেন, 'প্রতিদিন প্রায় একশ' গাড়ি ধান বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। অটোমেটিক মেশিন না থাকায় বাহিরে কৃষকদের ধান বিক্রি করতে হয়।'
উত্তরবঙ্গে যাওয়া ধানের একটি অংশ আবার চাল হয়ে ফিরে আসে হবিগঞ্জে। এতে টনপ্রতি যুক্ত হয় ৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত পরিবহন খরচ। যে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হচ্ছে ভোক্তার পকেট থেকে।