শতবর্ষী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকট, ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে
বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে | ছবি: এখন টিভি
0

হবিগঞ্জ শহরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে নানামুখী সংকটে। পর্যাপ্ত জায়গা ও শ্রেণিকক্ষের অভাবে একই কক্ষে চলছে একাধিক শ্রেণির পাঠদান। এমনকি অফিস রুমেও পড়াতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম। বিদ্যালয়ের জায়গা পৌরসভার দখলে থাকায় নতুন ভবন নির্মাণও সম্ভব হচ্ছে না।

এক কক্ষেই চলছে দুই শ্রেণির পাঠদান। শিক্ষার্থী আর দুই শিক্ষকের পড়াশোনার শব্দ নিয়ন্ত্রণে মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অস্থায়ী পার্টিশন। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে সবার পড়ালেখা। এ দৃশ্য হবিগঞ্জ শহরের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের বিদ্যালয়ে কোনো খেলার মাঠ নেই। ক্লাসরুম কম থাকায় তাদের লেখাপড়ায় সমস্যা হয় বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি একসময় শহরের অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দীর্ঘদিনেও হয়নি কোনো উন্নয়ন। ফলে এখন জরাজীর্ণ ভবন আর পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের অভাবে টিকে আছে কোনোমতে। নেই শিশুদের খেলার মাঠ, এমনকি টয়লেটও। জরুরি প্রয়োজনে পাশের বাসার টয়লেট ব্যবহার করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষকরা বলছেন, অফিস কক্ষেও ক্লাস নিতে হচ্ছে তাদের। অথচ বিদ্যালয়ের মোট ১৭ শতক জায়গার একটি বড় অংশ দখল করে নিয়েছে হবিগঞ্জ পৌরসভা। সেখানে খনন করা হয়েছে পুকুর। ফলে জায়গা সংকটে নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে না বিদ্যালয়ের।

আরও পড়ুন:

শিক্ষকরা জানান, তাদের বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা কম থাকায় তাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। একই কক্ষে দুই শ্রেণির পাঠদান চলে এখানে। পাশাপাশি এখানে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, দখল হওয়া জায়গা পুনরুদ্ধারে পৌরসভার সঙ্গে আলোচনা চলছে। জায়গা ফিরে পেলে দ্রুতই নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, ‘একটি বিদ্যালয়ে যেসব সুযোগ সুবিধা থাকার কথা এ বিদ্যালয়ে সেসব সুযোগ সুবিধা নেই। কোনো টয়লেট নেই। ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা করবে এ ধরনের খেলান মাঠ নেই। জমি যদিও আছে তবে এ জমি আর আমাদের দখলে নেই। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুর খনন করে জমি পুকুরের মধ্যে নিয়ে গেছে।’

তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, কাগজপত্র না দেখে দখলের বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে পৌরসভা।

হবিগঞ্জ পৌরসভা পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘তারা যে বলছেন তাদের শতক শতক জায়গা কাগজ দেখলে তা কনফার্ম হওয়া যাবে। এখানে মাননীয় আদালতের একটি নিষেধাজ্ঞা আছে কাজ করা সম্ভব হবে না। আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আমরা শিক্ষা বিভাগের সহযোগিতার মাধ্যমে পদক্ষেপ নেব।’

শত বছরের ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংকট কাটাতে দ্রুত উদ্যোগ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

এফএস