এ যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে ইউক্রেন। দেশটির পূর্বাঞ্চলে খারকিভে রাশিয়ার আগ্রাসন সোমবারও অব্যাহত। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে খারকিভের উত্তরাঞ্চল। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরে রুশ সেনারা প্রবেশ করেছে গেলো ১০ মে। পূর্বাঞ্চলে একটু একটু করে সেনা সক্ষমতা বাড়াচ্ছে মস্কো, যেখানে দুর্বল হচ্ছে কিয়েভের অবস্থান। পশ্চিমা সামরিক সহায়তার অভাবে ১ হাজার কিলোমিটারের সম্মুখসারির পুরোটাতে ইউক্রেনের জন্য টিকে থাকা কঠিন হচ্ছে।
শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত খারকিভের ৯টি গ্রাম দখল করে ফেলেছে বলে দাবি করছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া সফলতা পেয়েছে, সেনাদের দমিয়ে রাখতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের অভ্যন্তরে রুশ সেনাদলের এতো দ্রুত অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি সেনা অভিযান শুরুর পর এই প্রথম।
খারকিভের গভর্নর বলছেন, রাশিয়া ছোট ছোট সেনাদল নিয়ে ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলে এগিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে ১০০ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা দখলে নিয়েছে রাশিয়া। এরমধ্যে চলছে ড্রোন হামলা। ইউক্রেনের নিরাপত্তা কাউন্সিল বলছে, শুধু খারকিভের বিরুদ্ধেই রাশিয়ার হাজার হাজার সেনা প্রস্তুত। সীমান্তে ছিলো ৫০ হাজার, আরও ৩০ হাজার সেনা আসছে।
সংবাদ মাধ্যম আরটি'র বিশ্লেষণ বলছে, কিয়েভের জন্য দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছে। কারণ ১৮ মাস আগে একই এলাকা রাশিয়া থেকে দখল করেছিলো তারা। এখন রাশিয়া খারকিভকে চরম চাপের মুখে রেখেছে। ভলোদিমির জেলেনস্কি খারকিভে কম সেনাসদস্য আর সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোয় লোকসান হয়েছে অনেক বেশি।
পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলছেন, কিয়েভ এখন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আছে। যেখানে পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তার সংকট তো আছেই, পাশাপাশি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে রাশিয়ার সেনা সক্ষমতা ভেঙে দিতে পারে ইউক্রেনীয়দের মনোবল। এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যে, কিয়েভকে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনায় বসতে হতে পারে মস্কোর সঙ্গে। যদিও হোয়াইট হাউজ বলছে, কংগ্রেসে অনুমোদিত ৬ হাজার কোটি ডলার সামরিক সহায়তার মধ্যে কিছু সমরাস্ত্র ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে আছে।
এরমধ্যেই মঙ্গলবার কিয়েভ সফরে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুদ্ধক্ষেত্রের সবশেষ অবস্থা, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সহায়তা আর ইউক্রেনের অর্থনীতি পুনর্গঠন নিয়ে ব্লিঙ্কেন আলোচনা করবেন ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে।